

বিশ্ব স্ট্রোক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে স্ট্রোক প্রতিরোধ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ আক্তার হোসেন, এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাকি মোহাম্মদ জাকিউল আলম।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুরুজ্জামান খসরু, নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজেশ সাহা, ডা. নাজমুল ইসলাম জয়, ও ডা. নাজমুল আলম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সিবাত আমিন খলিল এবং সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আবু ইসহাক।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোমেন খান। তিনি বলেন, স্ট্রোকের রোগীরা যদি লক্ষণ প্রকাশের ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আসতে পারেন, তবে আইভি থ্রম্বোলাইসিসের মাধ্যমে কার্যকর চিকিৎসা সম্ভব।
ডা. মোমেন খান আরও জানান, আমাদের দেশে প্রায় ১ দশমিক ১৪ শতাংশ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ শতাংশে। আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, এখন অল্পবয়সী—অর্থাৎ ৪০ বছরের নিচের মানুষও স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছে, যার হার প্রায় দশমিক ৪৬ শতাংশ। সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য হলো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে যে, বাংলাদেশে মৃত্যুর প্রধান কারণ স্ট্রোক, এবং স্ট্রোক-পরবর্তী অক্ষমতায় প্রায় ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ ভোগে। স্ট্রোকের প্রধান কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপিডেমিয়া ও ধূমপানকে।
বক্তারা স্ট্রোক প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপন পরিহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পরে কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়, যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। র্যালিটি ক্যাম্পাস ঘুরে সচেতনতা বার্তা প্রচার করে। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি স্ট্রোক বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন।
মন্তব্য করুন