

ইডেন মহিলা কলেজে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জার্নাল অব ইডেন মহিলা কলেজ-২০২৫ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় কলেজ অডিটোরিয়াম এ আয়োজন করা হয়।
জাতীয় পতাকা উত্তোল ও জাতীয় সংগীত পাঠের মাধ্যম অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর জার্নাল অব ইডেন মহিলা কলেজ-২০২৫ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক অধ্যাপক ড. আফরোজা বেগম এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও জার্নাল অব ইডেন মহিলা কলেজ ২০২৫ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা পারভীন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইডেন মহিলা কলেজর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ আজম বলেন, অনেকে রাজনৈতিকভাবেই যুদ্ধকে ব্যাখ্যা করতে চায়। অনেকেই বলে যে, এই যুদ্ধের পরিস্থিতি বা বাস্তবতার বিরোধিতা করা হয়তো অস্বাভাবিক ছিল না। আমি রাজনীতির পথে এই ধরনের বিরোধিতাকে স্বাগত জানাই।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে একটি ঘুমন্ত জনগোষ্ঠীর ওপর পাকিস্তানি বাহিনী হামলা চালায়। বাস্তবে জনগোষ্ঠী তখন ঘুমন্ত ছিল না; তারা আগে থেকেই জাগ্রত ছিল এবং রাজনৈতিক সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল। তবে গভীর রাতে, জীববৈজ্ঞানিক অর্থে মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, ঠিক সেই সময়েই পাকিস্তানি বাহিনী আকস্মিক আক্রমণ চালায়।
তিনি বলেন, এর আগে বিষয়টি রাজনৈতিক আলোচনার পর্যায়ে থাকলেও ওই হামলার পর পরিস্থিতি সরাসরি সামরিক অভিযানে রূপ নেয়। তখন এটি আর রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ ছিল না; তা পরিণত হয় যুদ্ধের ভাষায়। এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই আমরা প্রত্যক্ষ সশস্ত্র সংগ্রামে জড়িয়ে পড়ি এবং জনগোষ্ঠীর প্রায় সর্বস্তরের অংশগ্রহণে সেই সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় অর্জিত হয়।
অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার বলেন, স্বাধীনতা মানে কী? একটা ভূখণ্ড পাওয়া, একটা মানচিত্র পাওয়া তা কিন্তু না। স্বাধীনতা মানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা। এই যে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালের আরও অনেক আগে থেকে। আমরা জানি, এদেশের ছাত্র জনগণ মেহনতি মানুষ সকল স্তরের জনগণ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬৬ এর ছয় দফা ল, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রাম এবং ত্যাগের মাধ্যমেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
আলোচনা সভায় বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বাঙালির আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতার চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, বিজয় দিবস শুধু একটি উৎসব নয়, এটি আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব, আত্মপরিচয় ও গৌরবের প্রতীক।
আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন