কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ড্রাগন ফলে ‘টনিক’ চেনার উপায় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি জানুন

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে ড্রাগন ফল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখন এটি দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে এবং দামও তুলনামূলকভাবে কমেছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা চলছে, কিছু চাষি নাকি ফল বড় ও দ্রুত ফলন পাওয়ার জন্য এক ধরনের ‘টনিক’ ব্যবহার করছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কি না, তা নিয়েও অনেকের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ড্রাগন ফলের দেশীয় প্রজাতি

বাংলাদেশে এখন চারটি দেশীয় জাতের ড্রাগন ফল রয়েছে :

- বারি-১ (উদ্ভাবন করেছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট)

- বাউ ড্রাগন-১, ২ ও ৩ (উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)

‘টনিক’ আসলে কী?

‘টনিক’ বলতে বোঝানো হচ্ছে এক ধরনের গ্রোথ হরমোন— বিশেষ করে জিবারেলিক অ্যাসিড (GA3), যা গাছে ব্যবহার করলে দ্রুত ফলন পাওয়া যায়। এটি মূলত ভারত থেকে আসছে এবং চুয়াডাঙ্গা, কালীগঞ্জসহ সীমান্ত এলাকার কিছু কৃষক এটি ব্যবহার করছেন।

চাষির অভিজ্ঞতা

নাটোরের এক বড় ড্রাগন ফল চাষি মুন্না জানান, তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এসব টনিক ব্যবহার করেন না। কারণ যারা ব্যবহার করেছেন, তারা বলছেন— প্রথমে ফলন বেশি হলেও পরে গাছ দুর্বল হয়ে যায় এবং যত্ন নিতে বেশি সার ও পানি লাগে। এছাড়া, ছোট ফলই বাজারে বেশি দাম পায়।

স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু?

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোক্তার হোসেন এবং কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. কায়ছার দুজনই জানিয়েছেন, এই টনিক বা হরমোন ব্যবহারের কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। ফলে এসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা ফল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বিশেষ করে যদি মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়, তাহলে তার প্রভাব হতে পারে শরীরের ভেতরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট, দীর্ঘমেয়াদে নানা রোগ, এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও।

কীভাবে চেনা যাবে টনিক দেওয়া ড্রাগন ফল?

ড. মোক্তার হোসেন বলছেন, টনিক দেওয়া ড্রাগন ফল কিছু উপায়ে আলাদা করে চেনা যায় :

ওজন বেশি হয় : সাধারণ ড্রাগন ফল ২৫০-৩০০ গ্রাম হয়ে থাকে, কিন্তু টনিক দেওয়া ফল ৩০০ থেকে ৯০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে।

রং অস্বাভাবিক : প্রাকৃতিক ড্রাগনের রং গাঢ় লাল বা পার্পেল হয়। টনিক দেওয়া ফলে সবুজ রঙের দাগ বা অংশ থাকে।

আকৃতি অস্বাভাবিক : বাহ্যিকভাবে দেখতে সাধারণ ফলের চেয়ে অদ্ভুত লাগে।

স্বাদ : টনিক দেওয়া ফল পানসে, মিষ্টি থাকে না।

কাঁচা অবস্থায়ই বিক্রি : পাকা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে ফল পচে যায়, তাই কাঁচা অবস্থায় তাড়াতাড়ি বিক্রি করতে হয়।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ড্রাগনই নিরাপদ। হরমোন বা টনিক ব্যবহার করলে ফলের গুণগত মান যেমন কমে যায়, তেমনি বাজারেও মানুষের আস্থা নষ্ট হয়।

কৃষকদের প্রতি অনুরোধ, স্বল্পমেয়াদি লাভ নয়, দীর্ঘমেয়াদি টেকসই চাষাবাদে মনোযোগ দিন।

যে কোনো কৃত্রিম রাসায়নিক বা হরমোন ব্যবহার করে ফল উৎপাদন করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ড্রাগন ফল কেনার সময় সতর্ক থাকুন এবং যদি সম্ভব হয়, নিশ্চিত হন যে সেটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অবলম্বনে

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্কুলে ভর্তির লটারি আজ, ফল দেখবেন যেভাবে

১৮ ঘণ্টায় উদ্ধার হয়নি শিশু সাজিদ, সর্বশেষ যা জানা গেল

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১১ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

জাবি ছাত্রশক্তির সভাপতি আয়ান, সাধারণ সম্পাদক অন্বেষা

সাজিদকে আল্লাহর জিম্মায় ছেড়ে দিলেন অসহায় বাবা

শিশু সাজিদকে উদ্ধারে করা হয়েছে ৪০ ফুট গভীর গর্ত

বেগম রোকেয়াকে নিয়ে দেওয়া সেই পোস্ট সরিয়ে নিলেন রাবি শিক্ষক, জানালেন কারণ

১৫ ঘণ্টা পার হলেও উদ্ধার হয়নি শিশু সাজিদ

ছোট্ট সাজিদের উদ্ধার তৎপরতায় ‘ধীরগতি’

১০

শিশু সাজিদের অপেক্ষায় উৎসুক জনতার নির্ঘুম রাত 

১১

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শোয়াইব গ্রেপ্তার

১২

তানিয়া রবের গাড়ি বহরে হামলা নব্য ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি : জেএসডি

১৩

মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব : লায়ন ফারুক

১৪

মহিপুরে ছাত্রদল নেতার ওপর হামলার অভিযোগ

১৫

৩৫ ফুট গর্তে একাধিকবার পাঠানো হলো ক্যামেরা, দেখা যায়নি শিশুটিকে

১৬

তারেক রহমান কবে ফিরবেন জানালেন ইশরাক

১৭

জেলা ছাত্রদল সভাপতির ওপর হামলা

১৮

যেভাবে গভীর গর্তে পড়েছিল শিশুটি, জানালেন মা

১৯

২৬ টন পলিথিন জব্দ, ৩ জনের কারাদণ্ড

২০
X