বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৮ এএম
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

৩৫ ফুট গর্তে একাধিকবার পাঠানো হলো ক্যামেরা, দেখা যায়নি শিশুটিকে

রাজশাহীতে গর্তে পড়ে যাওয়া শিশুটির উদ্ধার অভিযান। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহীতে গর্তে পড়ে যাওয়া শিশুটির উদ্ধার অভিযান। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের প্রায় ৩৫ ফুট গভীর গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কয়েক দফা ক্যামেরা নিচে পাঠানো হলেও শিশুটির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রথমবার ক্যামেরা নামান। তবে গর্তের ভেতর ওপর থেকে ধসে পড়া মাটি ও খড়ের কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকায় তারা শিশুটিকে দেখতে পাননি। রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয়বার ক্যামেরা পাঠানো হলেও ফলাফল একই থাকে—শিশুকে শনাক্ত করা যায়নি।

শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, বেলা একটার দিকে দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ ‘মা’ বলে ডাকার শব্দে তিনি পেছনে তাকান, কিন্তু তখন আর ছেলে পাশে নেই—গর্তের ভেতর থেকে তাকে ডাকছে। খড়ের নিচে লুকিয়ে থাকা গর্তটি বুঝতে না পেরে সেখানেই পা দিয়ে নিচে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ডাক ক্ষীণ হয়ে আসে এবং একসময় পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায়।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাজারো মানুষ ভিড় করে ঘটনাস্থলে। এতে উদ্ধার কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় বলে জানায় প্রশাসন। সেখানে প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারে কাজ করছে; গর্তে আলো ও বাতাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে জমির মালিক কছির উদ্দিন সেচের জন্য সেমি ডিপ নলকূপ বসাতে গিয়ে এই গর্তটি খনন করেছিলেন। কিন্তু পানি না মেলায় কাজটি আর এগোয়নি— ফলস্বরূপ খোলা অবস্থাতেই রয়ে যায় বিপজ্জনক এ গর্তটি। আজ সেই অবহেলাই যেন প্রাণ সংকটে ফেলেছে দুই বছরের নিষ্পাপ সাজিদকে। শিশুটির মা খড় তুলতে মাঠে গিয়েছিলেন। সেই সময় খেলতে থাকা সাজিদ হঠাৎ গর্তে পড়ে যায়। প্রথমে স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেও তাকে তুলতে পারেননি। পরে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে।

তানোর, রাজশাহী সদর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ— ৩টি স্টেশনের ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। গর্তের ভেতরে পাইপ দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে, যেন সাজিদ বেঁচে থাকার শক্তিটুকু ধরে রাখতে পারে।

রাত ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। ক্যামেরা পাঠিয়েও শিশুটিকে দেখা যায়নি। আমরা তাকে অক্ষতভাবে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তবে সে বেঁচে আছে কিনা—এ বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। আশা করছি, দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে তাকে উদ্ধার করতে পারব।

তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান জানান, ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। আমরা প্রার্থনা করছি, শিশুটি যেন নিরাপদে মায়ের কাছে ফিরে আসে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৩৫ ফুট গর্তে একাধিকবার পাঠানো হলো ক্যামেরা, দেখা যায়নি শিশুটিকে

তারেক রহমান কবে ফিরবেন জানালেন ইশরাক

জেলা ছাত্রদল সভাপতির ওপর হামলা

যেভাবে গভীর গর্তে পড়েছিল শিশুটি, জানালেন মা

২৬ টন পলিথিন জব্দ, ৩ জনের কারাদণ্ড

পুরোনো ফোন আমদানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দিল সরকার

লোকসান পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

নির্বাচন নিয়ে ন্যূনতম সংশয় সৃষ্টির কোনো অবকাশ নেই : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

আবার পিছিয়ে গেল ব্রাকসু নির্বাচন

রাশেদ খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দলের আরেক নেতার

১০

জামায়াত কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

১১

এন‌ইআইআর চালু হচ্ছে ১৬ ডিসেম্বর, ফোন নিবন্ধন চলবে মার্চ পর্যন্ত

১২

ডাকসুর সভায় গুম-খুন বন্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ও জাতীয় ঐক্যের দাবি

১৩

২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেইমারকে ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী সান্তোস

১৪

আবারও হাফেজ আনাসের বিশ্বজয়

১৫

ধানের শীষ বিজয়ী হলে দেশ রক্ষা পাবে : তারেক রহমান

১৬

সাতক্ষীরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

১৭

পাশাপাশি ২ ভবন ধসে নিহত ১৯

১৮

১৪০ আসনে প্রার্থী দিল এনপিপি

১৯

৬ ঘণ্টার বেশি অবরুদ্ধ থেকে সচিবালয় ছাড়লেন অর্থ উপদেষ্টা

২০
X