

নাশতা হলো দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এই কথা আমরা সবাই কমবেশি শুনেছি। কিন্তু সত্যিই কি নাশতা বাদ দেওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ? নতুন গবেষণা বলছে—সমস্যা হয়তো এতটাই বড় নয়, যত আমরা ভাবি।
বেশ কিছু গবেষণা দেখিয়েছে যে, যারা নাশতা খান তারা সাধারণত স্বাস্থ্যবান। তারা কম স্থূল এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কম থাকে।
কিন্তু এটি কি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, নাশতা নিজেই স্বাস্থ্য ভালো রাখে? না। কারণ এগুলো পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা। সম্ভবত নাশতা খাওয়া মানুষের আরও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস থাকে—যেমন বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, কম ধূমপান, কম মদ্যপান এবং নিয়মিত ব্যায়াম।
বাস্তবতার দিক থেকে দেখা যায়, উচ্চমানের গবেষণা (randomized controlled trials) বলছে—নাশতা খাওয়া বা বাদ দেওয়া আসলে স্বাস্থ্য বা ওজনে বড় প্রভাব ফেলে না।
অনেকে মনে করেন, নাশতা খেলে মেটাবলিজম দ্রুত কাজ শুরু করে। এটি ঠিক নয়।
যত ক্যালোরি আপনি দিনে খান তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কখন খাচ্ছেন তা নয়। গবেষণা দেখিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্যালরি পোড়ার পরিমাণ নাশতা খাওয়া বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন পার্থক্য নেই।
অনেকে ভাবেন, নাশতা না খেলে বিকেলে বেশি খেয়ে ওজন বাড়ে। তবে প্রমাণ এমন নয়।
নাশতা বাদ দিলে দুপুরে ক্ষুধা বেশি হয়, কিন্তু এটি মোট ক্যালরি খাওয়ার তুলনায় খুব বেশি নয়। কিছু গবেষণা দেখিয়েছে, নাশতা বাদ দিলে প্রতিদিন ৪০০ ক্যালরি পর্যন্ত কম খাওয়া যায়।
একটি চার মাসের গবেষণায় দেখা গেছে, শতা খাওয়া বা বাদ দেওয়ার মধ্যে ওজনে কোনো পার্থক্য হয়নি।
অনেক intermittent fasting পদ্ধতিতে, যেমন 16/8 পদ্ধতি, নাশতা বাদ দেওয়া হয়। এতে
- ১৬ ঘণ্টা উপবাস, ৮ ঘণ্টার খাবার সময়
- সাধারণত দুপুর থেকে রাতের খাবার পর্যন্ত খাওয়া
- এটি ক্যালরি কমায়, ওজন কমায় এবং মেটাবলিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
কিন্তু সবার শরীরে এটি একভাবে সাড়া দেয় না। intermittent fasting কারও জন্য ভালো, কারও জন্য মাথাব্যথা বা রক্তচাপ কমার কারণও হতে পারে।
আপনি যদি সকালে ক্ষুধা অনুভব করেন এবং নাশতা পছন্দ করেন, প্রোটিন সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর নাশতা খান। কিন্তু যদি ক্ষুধা না লাগে, তবে বাদ দেওয়াই ঠিক। সবই সহজ এবং ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর নির্ভর করে।
মনে রাখবেন, নাশতা বাধ্যতামূলক নয়। স্বাস্থ্যবান জীবনযাপনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সারাদিনের খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।
সূত্র: হেলথলাইন
মন্তব্য করুন