গরমে ভ্যাপসা আবহাওয়া, অফিসে দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, তার সঙ্গে আশপাশের কানে-পাকা আওয়াজ—সব মিলিয়ে হালকা মাথাব্যথা যেন এখন নিত্যসঙ্গী। অনেকেই এমন পরিস্থিতিতে মাথাব্যথাকে ‘মাইগ্রেন’ ভেবে অবহেলা করেন। আবার কেউ কেউ ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট খেয়ে সাময়িক স্বস্তি পান; কিন্তু সমস্যার মূল কারণ খুঁজে দেখেন না। চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের নিয়মিত ও তীব্র মাথাব্যথা কখনো কখনো মস্তিষ্কে টিউমারের প্রাথমিক ইঙ্গিতও হতে পারে।
সম্প্রতি ভারতের দিল্লি এইমসের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাহুল চাওলা এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জানান, মাথাব্যথার নেপথ্যে অনেক কারণ থাকতে পারে—তার মধ্যে ব্রেন টিউমরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সব ধরনের মাথাব্যথা যে মাইগ্রেন নয়, সেটা বোঝা জরুরি। কিছু ক্ষেত্রে এটি ‘সেকেন্ডারি হেডেক’ নামে পরিচিত, যা আসলে কোনো অন্তর্নিহিত রোগের ফল।
একটি বাস্তব উদাহরণ
ডা. রাহুল জানান, সম্প্রতি তার কাছে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগী এসেছিলেন, যিনি প্রায় দুই দশক ধরে মাইগ্রেনে ভুগছিলেন। নিয়মিত ওষুধ খেতেনও। কিন্তু হঠাৎ করেই ছয় মাস আগে তিনি ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন এবং আশ্চর্যভাবে ওই সময়টায় মাইগ্রেনের কোনো সমস্যা হয়নি।
এরপর দু’মাস ধরে আবার প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হলে তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, তার মস্তিষ্কে একটি টিউমার হয়েছে এবং সেটিই এই নতুন ধরনের যন্ত্রণার কারণ।
মাইগ্রেন নাকি অন্য কিছু, যেভাবে বুঝবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাথাব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, সময়ের সঙ্গে তীব্রতা বাড়ে, অথবা স্বাভাবিক ওষুধে উপশম না হয়, তবে বিষয়টি অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এ ছাড়া, মাথাব্যথার সঙ্গে যদি ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব, ভারসাম্য হারানো, অথবা কথা জড়ানো—এমন উপসর্গ দেখা দেয়, তবে অবশ্যই স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
ডা. রাহুল চাওলা বলেন, ‘সব মাথাব্যথা মাইগ্রেন নয়। অনেক সময় এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে টিউমার বা অন্য গুরুতর সমস্যা। তাই নিয়মিত বা অস্বাভাবিক মাথাব্যথাকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন