কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ এএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যাপরবর্তী স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া জরুরি 

‘বন্যা পরবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ের বাস্তবতার নিরিখে করণীয় নির্ধারণে বহুপক্ষীয় পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত। ছবি : সংগৃহীত
‘বন্যা পরবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ের বাস্তবতার নিরিখে করণীয় নির্ধারণে বহুপক্ষীয় পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত। ছবি : সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বন্যা কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেট ও চট্টগ্রাম এলাকায় চরম মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার এবং সব বেসরকারি সেক্টরের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার পরেও স্বাস্থ্য খাতে নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। খাদ্যাভাব এবং বন্যার প্রাথমিক সংকট কেটে গেলেও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে বিশেষ নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে ব্র্যাক এবং ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারজ (ইউএইচসি) ফোরামের যৌথ উদ্যোগে ‘বন্যাপরবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ের বাস্তবতার নিরিখে করণীয় নির্ধারণে বহুপক্ষীয় পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সংলাপে এসব কথা বলা হয়।

ইউএইচসি ফোরামের কনভেনর এবং ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে এই সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বন্যা কবলিত জেলার সিভিল সার্জন, সেনাবাহিনীর কুমিল্লা অঞ্চলের জিওসি, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থী, ফটিকছড়ি, খাগড়াছড়ি ও মাইজদীর বেসরকারি ও এনজিও প্রতিনিধিসহ ১৩০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পেশাজীবীদের বিভিন্ন গ্রুপ, এনজিও, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা।

সিভিল সার্জনরা জানান, এসব এলাকায় ডায়রিয়া এবং ত্বকের সংক্রমণের মতো পানিবাহিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাশাপশি পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া এবং সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বন্যার কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত কৌশলগত কর্মপন্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলমান বন্যার কারণে জাতির জন্য এটি একটি কঠিন সময়। আমাদের সবাইকে কার্যকরভাবে স্বাস্থ্যখাতের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করার জন্য এক হতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে। বন্যা পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম থেকে কেউ যেন বাদ না পড়ে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, ‘এ ধরনের দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষিত পেশাদারদের সবার আগে মাঠে নামা দরকার। এ সময় পানিতে ডুবে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, সাপের কামড় অথবা অজ্ঞাত প্রাণীর কামড়ে মৃত্যুর কারণগুলো আমাদের অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে।’

ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির (বিএইচপি) ঊর্ধ্বতন পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা পূরণ, বিশেষ করে অধিক সংখ্যক রোগির সেবাদান নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। এর পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় এবং তথ্য প্রাপ্তির বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী, সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগের ব্যবস্থাপনাকে উপেক্ষা করা যাবে না। সেইসঙ্গে জীবাণুবাহিত সংক্রমনের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’

সেনাবাহিনীর কুমিল্লা অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হারুন বলেন, ‘বন্যার সময় গর্ভবতী নারী, শিশু এবং বয়স্কদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত রাখা এবং দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে কাজে ঝাপিয়ে পড়তে ‘রেডি-টু-ডেপ্লয়’ টিম প্রস্তুত রাখা জরুরি। দুর্যোগ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতির পাশাপাশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা জরুরি।’

ইউএইচসি ফোরামের প্রতিনিধি ডা. আমিনুল হাসান বন্যাপরবর্তী স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং এই সংকট মোকাবেলায় ১০টি অ্যাকশন পয়েন্ট প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, এনজিও এবং সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ সত্ত্বেও ত্রাণবিতরণ, চিকিৎসাসেবা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পরিসেবার ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ বলেন, বন্যার পানি দূষিত, তাই সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন করা জরুরি। নিরাপদ পানি সরবরাহ, যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোকে অতিস্বত্তর দূষণমুক্তকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাস্তব চিত্রটি তুলে ধরে না, যার ফলে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখা যায় না। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চোখ হারানো জুলাই যোদ্ধা হিমেল পেল সাড়ে ৩ লাখ টাকার অনুদান

পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভাঙন / জিও ব্যাগ ফেলছে পাউবো, স্থানীয়দের দাবি টেকসই বাঁধ

৫ শিক্ষকের ৪ জনই অনুপস্থিত, পাঠদান ব্যাহত

একবার সুযোগ দিন, ফেল করলে দ্বিতীয়বার চাইবো না : ফয়জুল করিম

হেফাজত আমিরের সঙ্গে নেজামে ইসলাম পার্টির নেতার বৈঠক

সারাদেশে আলিম ও কারিগরির এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রে বন্যা কেন এত মারাত্মক হলো, দায় কার?

সরকারি টাকায় গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ

কুমিল্লা বোর্ডের বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করলেন নৌবাহিনী প্রধান

১০

ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির এক বছরের জেল

১১

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে অস্থায়ী চেয়ারম্যান নিয়োগ

১২

চাঁদাবাজ দুর্নীতিবাজদের বয়কট করুন : নাহিদ ইসলাম

১৩

চাল বাজারে তদারকি, ১৩৮ প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা

১৪

ফেনীসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান

১৫

মোসাদ্দেক ইস্যু- সরি বলেছেন গাজী আশরাফ

১৬

শিক্ষার্থীদের ব্লকেড কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ, আহত ২০

১৭

উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়ক পরিণত হয়েছে ডোবায়

১৮

প্রতীক তালিকায় থাকছে না ‘শাপলা’, নীতিগত সিদ্ধান্ত ইসির

১৯

১৮ জুলাই এক জিবি ইন্টারনেট ফ্রি পাবেন গ্রাহকরা

২০
X