গত বছরের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে গুলিতে দুই চোখ হারানো স্কুলছাত্র হিমেল অনুদানের সাড়ে তিন লাখ টাকা পেয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সাতটি চেকের মাধ্যমে হিমেল ও তার মা আছিয়া বেগমের হাতে অনুদানের সাড়ে তিন লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. যুবদীল খান, মির্জাপুর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইমন সিদ্দিকী ও উপজেলা বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মিরাজ মিয়া উপস্থিত ছিলেন। অনুদানের চেক পেয়ে হিমেল ও তার মা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ সময় হিমেল জানায়, ‘আমি হয়তো জীবনে আর আমার চোখ ফিরে পাব না, তবে এই টাকা দিয়ে অনেক কিছু করতে পারব।’
মির্জাপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, হিমেলের বাবার নাম আফাজ উদ্দিন। গত বছরের ৪ আগস্ট ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গোড়াই হাইওয়ে থানা সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারায় সে। এরপর তাকে পর্যায়ক্রমে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা চক্ষুবিজ্ঞান কলেজ এবং সিএমএইচে নেওয়া হলেও দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করা যায়নি।
হিমেলকে সহযোগিতার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর তহবিল থেকে ৩৫ হাজার টাকার চেকসহ মোট তিন লাখ ৩৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম কালবেলা বলেন, ‘স্কুলছাত্র হিমেল ও তার পরিবার দরিদ্র ও অসহায়। হিমেলের দুটি চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার পরিবার ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিমেলের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে পেরেছি, এটাই সার্থকতা।’
মন্তব্য করুন