

কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যেই ঘাড় মটকে দেওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। সঙ্গে সঙ্গে যে কটকট করে আওয়াজ হয়, তা শুধু মনকে আরাম দেয় না, অস্থিসন্ধির ক্ষেত্রেও একই প্রভাব দেখা যায়। সাময়িক হলেও এই অভ্যাসে ঘাড়ের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় বসে কাজ করলে পেশি শক্ত হয়ে যায়। এমন সময়ে বলপূর্বক ঘাড়ে ঝাঁকুনি দেওয়ার অনুভূতি বেশ স্বস্তিদায়ক।
কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, এই অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে শিরা-উপশিরার জটিল রোগ, অস্থিসন্ধি সমস্যা, এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
ঘাড় মটকানোর সময়ে কী ঘটে?
ঘাড় ঘোরালে বা স্ট্রেচ করলে যে কটকট আওয়াজ কানে আসে, তা হাড়ের নয়। মূলত এটি ঘটে সাইনোভিয়াল জয়েন্টে। দুটি হাড়ের মধ্যে থাকা সাইনোভিয়াল ক্যাভিটি জেলির মতো ফ্লুইডে ভর্তি থাকে। এই ফ্লুইড ঘাড়কে মসৃণভাবে নাড়াতে বা ঘোরাতে সহায়তা করে।
যখন এই জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেচ পড়ে, তখন ফ্লুইডের ভেতরে থাকা গ্যাসপূর্ণ বুদবুদ ফেটে যায়। এ থেকে কটকট আওয়াজ সৃষ্টি হয়। এছাড়া লিগামেন্টের সমস্যা থাকলেও ঘাড় ঘোরানোর সময় এমন আওয়াজ হতে পারে। তবে মাঝে মাঝে ঘাড় মটকানো সাধারণত মারাত্মক কোনো সমস্যা নয়।
ভ্রান্ত ধারণা ও সত্য
অনেকের মনে একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে, ক্রমাগত ঘাড় থেকে কটকট আওয়াজ হলে অর্থ্রাইটিস হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। হাড়ের ক্ষয় বা বার্ধক্যজনিত রোগ অনেক ক্ষেত্রে জিনগত কারণে হয়। তাই এই অভ্যাসের সঙ্গে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা অস্টিওপোরোসিসের কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
চিকিৎসকরা বলছেন, মাঝেমধ্যে ঘাড় মটকানো স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে বা নিয়মিত ঝাঁকুনি দেওয়ার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে অস্থিসন্ধি ও পেশি সমস্যা ডেকে আনতে পারে। তাই কাজের ফাঁকে হালকা স্ট্রেচ ও নিয়মিত ব্যায়াম করা অনেক বেশি নিরাপদ।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন