

সাফল্য এক দিনে পাওয়া যায় না—এটা গড়ে ওঠে ছোট ছোট ভালো অভ্যাসে। বিশেষ করে সকালটা কেমনভাবে শুরু করছেন, সেটাই অনেক সময় নির্ধারণ করে দেয় সারাদিন কেমন যাবে। বিশ্বের অনেক সফল উদ্যোক্তা, নেতা, লেখক বা খেলোয়াড়দের জীবন দেখে বোঝা যায়—তারা দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টা কাজে লাগান নিজেদের প্রস্তুত করতে, মনোযোগী হতে এবং নতুন দিনের জন্য শক্তি জোগাতে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, সকালের নাশতার আগেই তারা কোন কোন কাজ করে ফেলেন—
ভোরে ঘুম থেকে ওঠা : সফল মানুষরা জানেন—সময়ের মূল্য কতটা। তাই তারা অলসতা এড়িয়ে খুব ভোরে জেগে ওঠেন। যেমন, পেপসিকোর সাবেক সিইও ইন্দ্রা নুয়ি ভোর ৪টায় জেগে ৭টার মধ্যে অফিসে পৌঁছে যান। ওয়াল্ট ডিজনির সিইও বব আইগার জাগেন ৪টা ৩০-এ, আর টুইটারের জ্যাক ডরসি জাগেন ৫টা ৩০-এ।
বিছানা গুছিয়ে ফেলা : ঘুম থেকে উঠে বিছানা গুছিয়ে ফেলাটা ছোট একটা কাজ মনে হলেও এর প্রভাব বড়। এটা করলে দিনের শুরু হয় পরিপাটি ভাব নিয়ে, আর রাতে ক্লান্ত হয়ে ফিরলে মনে হয় শান্তি মেলে।
শরীরচর্চা : সকালে নাস্তার আগেই অনেক সফল ব্যক্তি শরীরচর্চা করে নেন—হাঁটা, যোগব্যায়াম, জগিং বা হালকা ব্যায়াম। এতে শরীর ও মন দুটোই সতেজ থাকে। এরপর অবশ্যই একটি স্বাস্থ্যকর নাশতা জরুরি।
গোসল : একটা ঠান্ডা বা কুসুম গরম পানির গোসল সকালে আপনাকে চাঙ্গা করে তুলবে। এতে মন ভালো থাকে, কাজের মনোযোগ বাড়ে, আর সারাদিন প্রাণবন্ত অনুভব হয়।
মন শান্ত রাখার জন্য মেডিটেশন : অনেক সফল মানুষ দিনের শুরুতে কয়েক মিনিট মেডিটেশন বা প্রার্থনা করেন। এতে মন স্থির থাকে, মনোযোগ বাড়ে, আর সারাদিনের ব্যস্ততা সামলানো সহজ হয়।
গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে সেরে ফেলা : ভোরবেলায় মন থাকে সবচেয়ে সতেজ, আশপাশে থাকে কম বাধা—তাই সফল ব্যক্তিরা এ সময়েই কঠিন বা মনোযোগসাপেক্ষ কাজগুলো সেরে ফেলেন। এতে দিনের শুরুতেই অনেক কিছু সম্পন্ন হয়।
আত্মসমালোচনা ও কৃতজ্ঞতা : গতকাল কী ভালো হলো, কী উন্নতি করা যায়—এসব লিখে রাখেন অনেকেই। এটা আত্মজ্ঞান বাড়ায়, আর নিজের সাফল্য ও ভুল দুটো নিয়েই সচেতন থাকতে সাহায্য করে।
সারাদিনের পরিকল্পনা : দিনের কাজ, মিটিং, অগ্রাধিকার—সবকিছুর তালিকা তৈরি করে ফেললে সময় নষ্ট হয় না। এতে কাজের চাপ কমে, উৎপাদনশীলতা বাড়ে।
খবর জানা : দেশ-বিদেশের খবর রাখা মানে পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ রাখা। সকালে পত্রিকা পড়া বা খবর দেখা—এটা সফল মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসের অংশ।
সফল ব্যক্তিরা নাশতার আগেই নিজেদের তৈরি করে নেন—মনকে শান্ত রাখেন, শরীরকে সচল রাখেন, আর লক্ষ্যকে চোখে রাখেন।
এই ছোট ছোট অভ্যাসই তাদের জীবনকে করে তোলে আরও সংগঠিত, শান্ত ও সফল।
মন্তব্য করুন