সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডেই (৯ম-২০) ৭ শতাংশে কোটা রেখে বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেবে সরকার। এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুর পৌনে ৩টায় গুলশানে নিজ বাসভবনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের প্রজ্ঞাপনটি পড়ে শোনান। এ সময় জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।
এতে দেখা গেছে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাশাপাশি তৃতীয় এবং চতুর্থ (১৪-২০তম গ্রেড) শ্রেণির চাকরিতেও কোটার নতুন এই হার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ফলে সব ধরনের সরকারি চাকরিতেই ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে।
পাঠকদের সুবিধার্থে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের বক্তব্য তুলে ধরা হলো। এতে বলা হয়েছে, সরকার এই মর্মে আদেশ জারি করছে, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রে কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব গ্রেডে নিম্নরূপ কোটা নির্ধারণ করা হইল।
ক- মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, খ-মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, গ-ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং ঘ-শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদগুলো সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা এবং বিগত ৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পরিপত্রটিসহ পূর্বে জারিকৃত এ-সংক্রান্ত সব পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গত রোববার (২২ জুলাই) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। তবে ন্যায়বিচারের স্বার্থে আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেন। অর্থাৎ হাইকোর্ট তার রায়ে সর্বমোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহালের কথা বললেও আপিল বিভাগ তা কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেন।
মন্তব্য করুন