কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক

রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স লি জুনহুয়ার মাঝে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ছবি : কালবেলা
রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স লি জুনহুয়ার মাঝে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ছবি : কালবেলা

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও জলবায়ু বিষয় সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র সচিব।

নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সোমবার (১৪ অক্টোবর) এ বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নিউইয়র্ক।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স লি জুনহুয়ার মাঝে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময়, পররাষ্ট্র সচিব ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব’-এর আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে জানান। এই সংস্কার কার্যক্রমগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের পাঁচ দশকের সম্পর্কের ভিত্তিতে, বিশেষত জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রযুক্তি ও নীতিগত সহায়তা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন পররাষ্ট্র সচিব। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনা সরকারের একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার উল্লেখপূর্বক, তিনি কর ফাঁকি ও অবৈধ আর্থিক প্রবাহ রোধে জাতিসংঘ হতে সহযোগিতার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়ে এবং উত্তরণ পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন তিনি।

কোভিড-১৯ মহামারি এবং বৈশ্বিক সংঘাতের ফলে তৈরি হওয়া বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য এসডিজি অর্জন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে, পররাষ্ট্র সচিব জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিসের উন্নয়ন সহযোগিতাসহ সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের অধিকতর সহযোগিতা কামনা করেন।

এ ছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশের নেতৃত্বে সাধারণ পরিষদে ০৬ মে পল্লী উন্নয়ন দিবস সম্পর্কিত গৃহীত রেজ্যুলেশনে, জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টকে এই দিবস পালনের বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে নির্বাচন করায়, স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব। আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জুনহুয়া, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির চলমান সভায় বাংলাদেশের সভাপতিত্বের প্রশংসা করেন এবং জাতিসংঘ সচিবালয় থেকে সর্বাত্মক সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি জানান যে, বিশেষত সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা খাতে সহায়তার মাধ্যমে, জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে পারে। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ প্রকৃতপক্ষে একটি নতুন সূচনা এবং এলডিসি থেকে উত্তরণ হওয়া দেশগুলোর জন্য অগ্রাধিকারমূলক ব্যবস্থা থেকে সহায়তা অব্যাহত থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসডিজি বাস্তবায়নের বিষয়ে, তিনি ২০২৫ সালে স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সম্মেলনে উদ্ভাবনী অর্থায়ন, টেকসই ঋণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারসহ বৈশ্বিক উন্নয়ন সহায়তাকে শক্তিশালী করার প্রয়াস থাকবে বলে উল্লেখ করেন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জুনহুয়া।

এই বৈঠকের পূর্বে, পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন, জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যাকশন ও জাস্ট ট্রানজিশন বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা সেলউইন চার্লস হার্টের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করাসহ প্যারিস চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি অনেক দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তার ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের দ্বারা শূন্য কার্বন নির্গমনের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে সমাদৃত। বাংলাদেশের ‘ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যান’ -এর জন্য ২০৫০ সাল পর্যন্ত ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন হবে জানিয়ে তিনি অ্যাডাপ্টেশনের জন্য প্রয়োজনীয় জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি এবং অ্যাডাপ্টেশনের জন্য গৃহীত ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধতার বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সহায়তা কামনা করেন।

জলবায়ু সম্পর্কিত বৈশ্বিক আলোচনায় দীর্ঘদিন বাংলাদেশের নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকার প্রশংসা করেন বিশেষ উপদেষ্টা হার্ট। COP29-এ বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অ্যাডাপ্টেশন এবং রেজিলিয়েন্স নিশ্চিতকরণে দেশভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির উপরও জোর দেন তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন এলডিসি, এলএলডিসি এবং সিডস্‌-এর জন্য জাতিসংঘের উচ্চ প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমার সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সংস্কার কর্মসূচিতে জাতিসংঘের সহায়তা, এলডিসি থেকে উত্তরণ এবং উত্তরণের সময় ও উত্তরণ পরবর্তী ধাপে জাতিসংঘের সহায়তা এবং জাতিসংঘের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধিকরণের মতো বিষয়গুলো তাদের আলোচনায় প্রাধান্য পায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সুখবর পেতে যাচ্ছেন তারেক রহমান

ভারতে এলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

খালেদা জিয়া ঐক্যের প্রতীক : আমিনুল হক

বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার

নভেম্বরে আড়াই লাখ ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করেছে ডিএনসিসি

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণে সহপাঠীসহ ৩ জন রিমান্ডে

কাতারের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে মধ্যরাতে

কৃষকের ১২ হাজার তরমুজ চারা নষ্ট করল দুর্বৃত্তরা

বন্ধুত্বের টানে যশোরে কোরিয়ান নাগরিক সিমকো 

হিরো আলমকে হত্যাচেষ্টায় জামিন পেলেন ম্যাক্স অভি

১০

হাসনাত-সাদিকসহ অক্সফোর্ড ইউনিয়নে আমন্ত্রণ পেলেন যারা

১১

গতি বাড়াতেই বিচ্ছিন্ন হয় বগি, শব্দ পেয়ে ট্রেন থামালেন চালক

১২

দুই মাসের জন্য ছিটকে গেলেন রিয়াল তারকা

১৩

নিজ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় যা বললেন আলোচিত ফয়জুল হক

১৪

জনস্বাস্থ্য পেশার সম্ভাবনা নিয়ে আইএসইউতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের সেমিনার 

১৫

সিনেমার কায়দায় প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব, ভিডিও ভাইরাল

১৬

আজও কমলো স্বর্ণ ও রুপার দাম

১৭

চমকে দিলেন ফারিণ

১৮

সাগরের ৩৯২ মিটার গভীরে কী বানাচ্ছে নরওয়ে

১৯

সাভারে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিএনপির দোয়া

২০
X