কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২৮ পিএম
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে আসিফ দেখালেন কোথায় রাখা হয়েছিল তাকে

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি : সংগৃহীত
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি : সংগৃহীত

গত জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের টর্চারসেলে রাখা হয়েছিল আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। বুধবার (১২ ফ্রেবুয়ারি) সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি চিনতে পেরেছেন তিনি। দেয়ালের উপরের অংশের খোপগুলোতে এক্সস্ট ফ্যান ছিল বলে জানান আসিফ।

বুধবার (১২ ফ্রেবুয়ারি) নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সহকারী প্রেস সচিব সুচিম্মিতা তিথি। এর আগে, সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শনে যান।

এসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এ রকম ইন্টারোগেশন সেল, টর্চার সেল সারা বাংলাদেশজুড়ে আছে; সেগুলো শুনলাম আজকে। আমার ধারণা ছিল যে, এখানে আয়নাঘর বলতে যে কয়েকটা আছে তাই। কিন্তু এখন শুনলাম, আয়নাঘরের ভার্সন সারা দেশজুড়ে আছে। কেউ বলছে ৭০০, কেউ বলছে ৮০০। সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি। কতটা জানা আছে, কতটা অজানা রয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নৃশংস অবস্থা। প্রতিটি জিনিস যে হয়েছে এখানে, যতটাই শুনি অবিশ্বাস্য মনে হয়। এটা কি আমাদেরই জগত, আমাদেরই সমাজ। আমরা কি এটা করলাম। যারা নিগৃহীত হয়েছে, যারা এটার শিকার হয়েছে তারাও আমাদের সঙ্গে আছে। তাদের মুখ থেকে শুনলাম- এটা কীভাবে হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে। গত সরকার সর্বক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে। এটা (আয়নাঘর) এর একটি নমুনা।’

এর আগে, ১৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছিলেন, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে। সেই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়। গুম করে বন্দিদের যেখানে রাখা হতো তা জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল বা আয়নাঘর নামে পরিচিত। কমিশনের সদস্যদের আহ্বানেই সেসব স্থাপনা পরিদর্শনে গেছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।

অভিযোগ রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। অন্য আরেকটি তথ্যে বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৪ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ৪০ জনকে। আর ৬৬ জনকে সরকারি হেফাজতে গ্রেপ্তার অবস্থায় পাওয়া গেছে।

যেসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে এসেছেন, তারা গুমের ব্যাপারে মৌনতা অবলম্বন করেছেন। ধারণা করা হয়, এসব মানুষদের গুম করে রাখা হয় আয়নাঘরে। অভিযোগ রয়েছে, আয়নাঘরেই বন্দি ছিলেন, অধ্যাপক মোবাশার হাসান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায়, মাইকেল চাকমা ও মীর আহমদ বিন কাসেমসহ অনেকে।

উল্লেখ্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ‘বিশেষ’ স্থানে রাখা হতো। এ নিয়ে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এসব স্থান ‘আয়নাঘর’ নামে প্রকাশ্যে আসে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আয়নাঘর থেকে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে আয়নাঘরের ভয়াবহতা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশে ৮০ আততায়ীর প্রবেশের তথ্য দিলেন জুলকারনাইন

শত্রুদের উদ্দেশে খামেনির হুঁশিয়ারি

যশোরে আ.লীগ নেতা বিজু গ্রেপ্তার

গুলিবিদ্ধ হাদির সঙ্গে থাকা রাফি জানালেন পুরো ঘটনার বিবরণ

২০২৬ সালের এইচএসসির সিলেবাস নিয়ে নতুন নির্দেশনা

পোস্টার সরালেন শিশির মনির

ওসমান হাদি লাইফ সাপোর্টে

হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

জীবিত ইলিশ দেখতে পর্যটকদের ভিড়

১০

ছাত্রদলের সহায়তায় মোবাইল ফিরে পেলেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার্থী জেরিন

১১

বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

১২

মির্জা ফখরুলের সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

১৩

গুলি লাগলে প্রথম ৩০ মিনিটে যা করবেন

১৪

শনিবার ‘ই’ ইউনিট দিয়ে শুরু হচ্ছে জবির ভর্তি পরীক্ষা

১৫

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

১৬

হাদিকে দেখতে গিয়ে ঢামেকে তোপের মুখে মির্জা আব্বাস

১৭

বিদেশি ৩০ নম্বর থেকে ‘হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন’ হাদি

১৮

ওসমান হাদির ওপর হামলায় বিএনপির নিন্দা

১৯

ওসমান হাদিকে নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

২০
X