সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘সড়ক দুর্ঘটনা গণহত্যার মতোই’ : বারভিডা 

বারভিডার সংবাদ সম্মেলন । ছবি : কালবেলা
বারভিডার সংবাদ সম্মেলন । ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশে প্রতি বছর ব্যাপক হারে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হচ্ছে। এ দুর্ঘটনা একটি গণহত্যার মতো। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে প্রাণহানি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয়নগরে একটি হোটেলে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনে (বারভিডা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

বারভিডা ব্যবসা, সহায়ক ভোক্তা ও রাজস্ববান্ধব শুল্ক এবং বাণিজ্য নীতিমালার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি আবদুল হক বলেন, গাড়ি বিলাসী হিসেবে ধরা হয়েছে। যার কারণে কয়েকগুণ বেশি শুল্ক দিতে হয়। গাড়ির দামও অনেক বেশি পড়ে। শুল্ক হ্রাস করা হলে গাড়ি বিক্রি বেশি হবে। সরকারের রাজস্ব বাড়বে- তাতে সরকারের লক্ষ্য পূরণ হবে। তাই গাড়ি কোনো বিলাসী নয়, এটা প্রয়োজন। বিলাসী না ভেবে প্রয়োজন ভেবে গাড়ির উপর শুল্ক হ্রাস করা উচিত।

আবদুল হক বলেন, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে গ্র্যাজুয়েশন নির্ধারিত হবে। দীর্ঘদিনের অপশাসন থেকে মুক্তির পর আমরা যে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের পথে যাত্রা শুরু করেছি তাতে একটি সমৃদ্ধ ও সম্মানজনক সমাজ কাঠামোয় গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ হওয়া প্রয়োজন। উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণি সৃজনের সুচিন্তিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হ্রাস এবং মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে গাড়ির মূল্য মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। এর ফলে বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জপূর্ণ পরিস্থিতিতে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজন। অর্থনৈতিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে তথা বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্যবিমোচনের লক্ষ্যে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণ আবশ্যক। মানসম্পন্ন পরিবহনসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে যেতে চায় বারভিডা।

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স আমদানিতে শুল্ক এবং ১৫% ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। এছাড়া দেশে ইলেকট্রিক গাড়ি, হাইব্রিড গাড়ি, প্ল্যাগ ইন হাইব্রিড এবং হাইড্রোজেন গাড়ি আমদানি ও গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে বারবিডা। এছাড়া নতুন ও পুরোনো গাড়ির শুল্কায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার তাগিদ দিয়েছে বারবিডা।

গণপরিবহনের বিভিন্ন নেতিবাচক দিক তুলে বারভিডার সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে গণপরিবহনগুলো ন্যায্য ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। মানুষ তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফিটনেসবিহীন গাড়িতে যাতায়াত করে। গণপরিবহনে ভাড়া কমানো উচিত। বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে রাজস্ব বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবন মান উন্নয়ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে গাড়ি একটি ভূমিকা বহন করে।

বিআরটিএর সমালোচনা করে বারভিডার এই সভাপতি আরও বলেন, বিআরটিএর কোনো আইন বা নীতিমালা নেই- তারপরও রিকন্ডিশন্ড গাড়িতে নতুন গাড়ির চেয়ে বেশি রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়। এটা বৈষম্য। বিআরটিএর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলেন- এটা আগে থেকে হয়ে আসছে।

তিনি বলেন, নতুন গাড়ির চেয়েও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে ফি কেন বেশি হবে- এটার কোনো যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেনি। কিন্তু বিআরটিএ থেকে এর ফি কমানো হয়নি। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি নতুন গাড়ির চেয়ে ২৭,৫০৮.০০ থেকে ৫৩,৯৫৮.০০ টাকা বেশি আদায় করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিআরটিএর গাড়ি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম নিয়ে জনগণের অভিযোগ ও অসন্তোষ রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে যেমন যুক্তরাজ্যে ড্রাইভারস অ্যান্ড ভেহিক্যালস লাইসেন্সিং অথরিটি (ডিভিএলএ) গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রদান করে, যা ডিলারদের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, সেখানে ক্রেতাকে যেতে হয় না। বিআরটিএতে আমরা জনবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব এমন উদ্যোগ চাই। আমরা বারভিডা থেকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। এ ছাড়াও আমাদের আমদানিকৃত গাড়িগুলো বিক্রির সময় দ্বৈত রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। জরুরিভিত্তিতে এ প্রথাটি বিলুপ্ত করা দরকার।

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ব্যবসায় মন্দা জানিয়ে বারভিডা সংগঠনের নেতারা বলেন, ২০২০-২১ সময়কালে করোনা মহামারির কারণে বারভিডা সদস্যদের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতা, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধি এবং উৎপাদনকারী দেশে গাড়ির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি করা গাড়িগুলোর দাম দেশের বাজারে অত্যধিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাওয়ায় গত কয়েক বছরে দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিক্রি লক্ষণীয় হারে কমে গেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মনিরামপুরে সড়ক দুর্ঘটনার জামায়াত নেতা নিহত

মায়ের খোঁজ নিতে এভারকেয়ারে তারেক রহমান

ছাত্রদলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা 

ডিসেম্বরের ২৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৩৩ হাজার কোটি টাকা

‘নির্বাচন বানচালের চক্রান্তে লিপ্তরাই দেশকে ১৭ বছরের জঞ্জালে ঠেলে দিতে চায়’ 

জাতীয় পার্টির (জাফর) নতুন মহাসচিব নওয়াব আলী আব্বাস 

জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাই মূল লক্ষ্য : আমিনুল 

উত্তরাঞ্চলে আলুর রেকর্ড, উৎপাদন এখন কৃষকদের গলার কাঁটা

পদত্যাগকারীদের বিষয়ে নাহিদের বক্তব্য

দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের ঘটনায় মামলা

১০

বঞ্চিত হয়েও বিএনপির নামেই মনোনয়ন কিনলেন ৫ নেতা

১১

সাবেক এমপির বিএনপি থেকে পদত্যাগ

১২

ভোটকেন্দ্র মেরামত ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ইসির নির্দেশ

১৩

৩০০ ফিটে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বৃক্ষরোপণ করল অ্যাব 

১৪

সাতক্ষীরায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার

১৫

ইনকিলাব মঞ্চের সড়ক অবরোধ, কক্সবাজার মহাসড়কে অচলাবস্থা

১৬

সাতক্ষীরার চারটি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা

১৭

বন্দরের অতিরিক্ত ভারী যানবাহনে বছরে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি চসিকের

১৮

প্রকাশ্য দিবালোকে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা

১৯

আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার

২০
X