আগামী বছর মে মাসের ১৮ বা ১৯ তারিখ পবিত্র হজ পালিত হবে। সে অনুযায়ী হাতে আরও ১০ মাস। এর মধ্যে ৪ লাখ টাকা নিয়ে হজের নিবন্ধন করতে বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। শুধু তাই নয়, হজ প্যাকেজ ঘোষণার আগেই নিবন্ধন করতে বলায় হজযাত্রী ও হজ এজেন্সি মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ২০২৬ সালের হজ রোডম্যাপ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। সৌদি সরকারের বাধ্যবাধকতার কারণে এমনটি করতে হচ্ছে।
এই সময়ের মধ্যেই হজযাত্রীদের প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হবে ৪ লাখ টাকা দিয়ে। পরবর্তী সময় হজ প্যাকেজ মূল্যের অবশিষ্ট টাকা জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ২০২৬ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে এমন ঘোষণা দেওয়া হয় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায থেকে।
হজে যেত ইচ্ছুক ও এজেন্সির মালিকরা জানিয়েছেন, দশ মাস আগে থেকেই চার লাখ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ অনেকটা জুলুম। হজ করতে ইচ্ছুক অনেকেই শেষ মুহূর্তে টাকা সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া, অনেক হাজি তাদের সঞ্চিত অর্থ ১০ মাস আগেই সৌদি সরকারকে দিয়ে দিতে হবে বলে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে বাধ্য হবেন। এই সিদ্ধান্তের কারণে হজযাত্রীর সংখ্যা কমে যেতে পারে—এমন শষ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উচিত সৌদি সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা।
সভায় হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর পক্ষ থেকে ২৪ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বাড়িভাড়া চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই হজ ফ্লাইট শিডিউল অনুমোদন, কোরবানি ও ক্যাটারিং সার্ভিস বাধ্যতামূলক না করা, হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি এবং হজ প্যাকেজ ৩৫-৪০ দিনে কমিয়ে আনাসহ সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল। হাবের সভাপতি ও মহাসচিব এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার কালবেলাকে জানান, সৌদি সরকারের রোডম্যাপ অনুসরণ করতে আমরা বাধ্য। হাব ধর্ম মন্ত্রণালয়কে নিবন্ধনের সময় ৪ লাখ টাকার পরিবর্তে ২ লাখ টাকা এবং বাকি ২ লাখ টাকা চূড়ান্ত তালিকাভুক্তির (পিআইডি) পর নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি বিবেচনাধীন রেখেছে। তার মতে, যারা হজ করতে যাবেন, তারা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত এবং মানসিক ও আর্থিকভাবে প্রস্তুতি নেন, তাই খুব বেশি সমস্যা হবে না মনে করি। চলতি বছর চুক্তি করতে দেরি হওয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের অনেক হাজি যেতে পারেননি। সৌদি সরকারকে সময়মতো অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে মোয়াল্লেম ও তাবু পাওয়ার কাজটি চরমভাবে ব্যাহত হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীরা ই-হজ সিস্টেম (www.hajj.gov.bd), লাব্বাইক মোবাইল অ্যাপ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয়, জেলা ও বায়তুল মোকাররম অফিস এবং আশকোনা হজ অফিস থেকে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। বেসরকারি মাধ্যমে হজ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে।
মন্তব্য করুন