রাজধানীর উত্তরায় ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে আরও অন্তত ৭০ জনকে। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর একদিন আগে ফেসবুক পেজে দেওয়া রহস্যময় সতর্কবার্তার একটি পোস্ট ভাইরাল হয়।
২০ জুলাই (রোববার) ফেসবুকে ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের ভেরিফায়েড ওই পেজে বলা হয়, ‘একটি স্কুল ভবন ধসে পড়তে যাচ্ছে, যার ফলে বহু শিশু প্রাণ হারাবে। আমরা এক ভয়াবহ বিপর্যয় এগিয়ে আসতে দেখছি।’
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘এই বিপর্যয়ের মূল কারণ হবে ভবনের অবহেলাজনিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব এটি ঠেকাতে। আমি একজন স্থপতি হিসেবে এই বার্তা দিচ্ছি।’
২১ জুলাই (সোমবার) দুর্ঘটনার পর ওই একই ফেসবুক পেজ থেকে আরেকটি পোস্ট আসে। এতে বাংলাদেশের বিমান দুর্ঘটনার ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, ‘আমরা সবসময় আগেভাগেই সতর্কবার্তা পাঠাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেগুলো গুরুত্ব পায় না। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।’
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘বর্তমানে একের পর এক বিপর্যয় ঘটছে। তাই আমাদের বার্তাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং আগে থেকেই প্রতিকার খুঁজুন—না হলে ক্ষতির দায় আপনাকেই নিতে হবে।’
পেজটির অ্যাবাউট সেকশন থেকে জানা গেছে, ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের এই ভেরিফায়েড পেজটি বিভিন্ন সময় নানা ধরনের আগাম সতর্কবার্তামূলক পোস্ট করে থাকে। তবে এরা কখনো নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে না।
পেজটি যুক্তরাষ্ট্র ও নাইজেরিয়া থেকে পরিচালিত হয় বলেও অ্যাবাউটে দেখা গেছে।
এদিকে ভাইরাল হওয়া পোস্টটির ব্যাপারে সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুল্লাহ আল জাবির বলেন, ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের পেজটি একটি ভুয়া ও প্রতারণামূলক পেজ। তাদের পোস্ট নিয়ে কাউকে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।
আবদুল্লাহ আল জাবির আরও বলেন, মূলত ‘ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি’র কারণে একটি স্কুল ভেঙে পড়বে বলে তারা পোস্ট করে। পরে বিমান বিধ্বস্তের সঙ্গে এটিকে মিলিয়ে তারা মানুষকে সহজে বোকা বানায়।
জাবির বলেন, তাদের মূল এজেন্ডা হচ্ছে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। এগুলো করে তারা পেজে কিছু ফলোয়ার বাড়িয়ে নেয়, এর বাইরে কিছু না।
তিনি বলেন, আমরা তাদের আইপিগুলো শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা দেখেছি এদের পুরো চক্র আফ্রিকা থেকে এসব ভুয়া পেজ অপারেট করে।
সবাইকে এসব ভুয়া পেজ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বাংলাদেশের এই সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
মন্তব্য করুন