রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮ বছর বয়সি শ্রেয়া ঘোষকে ছাড়পত্র দিয়েছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
শাওন বিন রহমান বলেন, ‘শ্রেয়া ঘোষকে নিয়ে দুর্ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে আমাদের ইনস্টিটিউট থেকে ৯ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হলো।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে ২৮ জন আহতের চিকিৎসা চলছে। তাদের সবার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আমরা আশা করছি, বাকিরাও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে এবং ছাড়পত্র পাবে।’
যাদের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে, তারা ভবিষ্যতে ইনস্টিটিউটে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও অপারেশন করাতে পারবে বলেও জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন।
এদিকে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তে শিশুসহ অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। ওই ঘটনার মাত্র ৭-৮ মিনিটের ব্যবধানে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। অলৌকিকভাবে বেঁচে ফেরার ঘটনার বর্ণনা জানিয়েছেন তিনি নিজেই।
শনিবার সকালে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণ ও আহতদের আরোগ্যের উদ্দেশে আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
নিয়োগের ভাইভায় না গেলে হয়তো সেদিন লাশ হয়ে যেতাম উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওইদিন শিক্ষক নিয়োগের একটা সাক্ষাৎকার ছিল। তাই সেই বোর্ডে যাই। দুর্ঘটনার ঠিক ৭-৮ মিনিট আগে আমি দুর্ঘটনার স্থান থেকে চলে গিয়েছিলেন, না হলে সেদিন মৃত্যু হতে পারত।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি পৌনে দুই বছর ধরে এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন একটার সময়, ছুটির সময় আমি বাইরে যাইনি। আমি বারান্দায় দাঁড়াই... ওইদিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন, ১টার সময়, দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। দুপুর ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম। আর ১২-১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।’
নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘যদি দুর্ঘটনাটি আরও কয়েক মিনিট আগে ঘটত, তাহলে আরও অনেক বড় ক্ষতি হতে পারত। কারণ ছুটির পর শিক্ষার্থীরা বের হতে সময় নেয়।’
অধ্যক্ষ উদ্ধারকাজে শিক্ষকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং যে কোনো অবহেলার দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন।
অনুষ্ঠানে নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জারিফ হাসানের বাবা হাবিবুর রহমান জানান, সেদিন জারিফ স্কুলে যেতে চায়নি এটা তার মা বলেছে। জারিফ খুব চটপটে ও বন্ধুসুলভ ছিল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মন্তব্য করুন