ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই যেখানে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি টেকসই ও সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে পারে। এটি বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি আমাদের নাগরিকদেরও দায় রয়েছে।’
আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ডা. নীলিমা ইব্রাহিম অডিটোরিয়ামে ‘শিশুদের ওপর জলবায়ু সংকটের প্রভাব’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পৃথিবী এক নজিরবিহীন জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি এবং এটি মোকাবিলার দায়িত্ব আমাদের সবার ওপর বর্তায়। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমাদের কোনো কর্মের ফলে যাতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তাদের অংশগ্রহণ কেবল গুরুত্বপূর্ণই নয়; বরং অপরিহার্য।’
একশনএইড বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বে এর প্রভাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে শিশুদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রধান সমস্যা এবং বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি হওয়াতে আমাদের ঝুঁকি বেশি। বাংলাদেশে প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন এবং প্রায় ২০ মিলিয়ন শিশু বিরূপ আবহাওয়া, বন্যা, নদীভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য পরিবেশগত সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একশনএইড বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে জলবায়ু ন্যায্যতার লড়াইয়ে শিশুদের সম্পৃক্ত করা একটি টেকসই এবং সহিষ্ণু ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য অত্যাবশ্যক।’
আনিসুর রহমান, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা; সাবেক সচিব ড. অপরুপ চৌধুরী; সাবেক অতিরিক্ত সচিব অরিজীত চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়; রুমানা ইয়াসমিন ফেরদৌসী, ডেপুটি সেক্রেটারি, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয়; রাবেয়া খন্দকার, অতিরিক্ত পরিচালক, সাসটেইনেবল ফিনেন্স ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য বিশিষ্টজন আলোচনায় অংশ নেন।
সাবেক সচিব ড. অপরুপ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ‘জলবায়ু সংকট কেবল একটি পরিবেশগত ঘটনা নয়, এটি আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিচ্ছে। তারা গৃহহীন হচ্ছে, তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এমনকি শিশুবিবাহ ও শিশুশ্রমের মতো কাজের যুক্ত হচ্ছে বাধ্য হচ্ছে।’
অর্থ মন্ত্রণালয় এর সাবেক অতিরিক্ত সচিব অরিজীত চৌধুরী বলেন, ‘যখন কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনো অর্থ বরাদ্দ দেয় তখন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকার কিছু করছে কি না তা লক্ষ্য রাখতে হবে। যে কোনো সরকারি-বেসরাকারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কার্যক্রমে পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়টি মাথায় রাখার আহ্বান করছি।’
শিশু প্রতিনিধি সিদরাতুল মুনতাহা প্রমি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে না। শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হয়েও এই পরিবর্তনের পরিণাম ভোগ করছে এবং প্রতক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
মন্তব্য করুন