গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার সেনানিবাসে নয় প্রকাশ্য ট্রাইব্যুনালে হতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে গণঅভ্যুত্থানের ঐক্যবদ্ধ জোট ‘জুলাই ঐক্য’।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সংগঠনটির সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, চব্বিশের বিপ্লবে স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে গেলেও রয়ে গেছে তার সহযোগীরা। ১৪ মাসেরও বেশি সময় অতিক্রম করলেও এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীতে পরিবর্তন আসেনি গণহত্যাকারীদের। চেয়ারে বসে এখনো ভারতীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন বিভিন্ন বাহিনীর বিপথগামীরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বৈরাচার হাসিনা, গণহত্যাকারী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গুম, গোপন আটক ও নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই পদক্ষেপ গুম ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের দীর্ঘদিনের বেদনা-বিক্ষোভে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে। কিন্তু এটি যথেষ্ট নয়।
এতে বলা হয়, সেনা দপ্তর জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জারি হওয়া ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সদস্যদের বিষয়ে সেনাবাহিনী আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে। যারা অভিযুক্ত কর্মকর্তা আছেন তাদের ইচ্ছা করলে পুলিশও গ্রেপ্তার করতে পারে। আবার তারা চাইলে আমাদের হেফাজতে আসতে পারেন।
জুলাই ঐক্য জানিয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করা ঐক্যবদ্ধ জোট জুলাই ঐক্য মনে করে অন্যান্য গণহত্যাকারীদের ন্যায় বিপথগামী দেশবিরোধী এসব সেনা সদস্যদের বিচার প্রকাশ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হতে হবে। একই সঙ্গে এই বিচারকার্য সরাসরি জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করতে হবে। জুলাই ঐক্য মনে করে এই পদক্ষেপ একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে এবং দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে চাইবে তাদের জন্য একটি শিক্ষা হয়ে থাকবে।
সংগঠনটির দাবি, সরকার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের নিকট অবিলম্বে সেনা হেফাজতে থাকা ১৫ বিপথগামী সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে জনগণের সামনে আনতে হবে। একই সঙ্গে যে সব অপরাধীরা পালিয়ে ভারত আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, গুম-খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার ফ্যাসিবাদী প্রশাসনের সব সদস্যের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিএফআই, র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য, কর্মকর্তা এই অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। চিহ্নিত অপরাধীদের ‘সেইফ এক্সিট’ বা দায়মুক্তি দেওয়ার যে কোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সোচ্চার থাকবে।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিপথগামী সব অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন