

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাষ্ট্রদূতসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলো রাষ্ট্রদূত ও ডেপুটি রাষ্ট্রদূতরা।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশান-২ অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এনসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার সদস্য দেশগুলোর কূটনীতিকদের বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইইউ ডেপুটি রাষ্ট্রদূত বাইবা জারিনা, ইইউ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন, জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, স্পেনের রাষ্ট্রদূত গাব্রিয়েল সিস্তিগা, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস রাগনার উইকস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন, নেদারল্যান্ডসের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত কুস ডিজকস্ট্রা ও ফ্রান্স দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ফ্রেডেরিক ইনজা।
অন্যদিকে এনসিপির পক্ষে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে যুগ্ম সদস্য সচিব ও আন্তর্জাতিক সেল উপ-প্রধান আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, যুগ্ম আহ্বায়ক ও আন্তর্জাতিক সেল প্রধান সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া এবং যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাভিদ নওরোজ শাহ্ উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে ঢাকাস্থ কয়েকটি দেশের মিশন। প্রতিদিনই অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় বসছেন তারা।
কী নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইইউ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন যতই কাছে আসছে ততই ইইউয়ের পক্ষ থেকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গুরুত্ব বাড়ছে। নানা পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো জানতে চাইছে নির্বাচনের আগে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কিনা। এছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কিনা তা নিয়েও ভাবনা রয়েছে ইইউর।
এর আগে, গত ৬ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় গোপন বৈঠক করে নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূতরা। অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে করা ২ ঘণ্টাব্যাপী সেই বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম কীভাবে শুরু করা যায় তা নিয়ে জানতে চেয়েছিল, সুইডেন নরওয়ে ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতরা। এছাড়া আওয়ামী লীগের সংস্কার করে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ করা প্রসঙ্গেও আলোচনা করেন তারা। তবে পরবর্তীতে এ নিয়ে জানাজানি হলে তা নিয়ে আর আলোচনা গড়ায়নি।
পরে নিয়মিত অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর বৈঠক চলে। ডিসেম্বরে প্রতিদিনই রাজনৈতিক বৈঠক করেছে তারা। গত মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যুতে বৈঠকে বসে ইইউ রাষ্ট্রদূতসহ সদস্য দেশের কূটনৈতিকরা। সেখানে ইইউর পক্ষ থেকে জানানো হয় বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় তারা। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচন ঘিরে চায় শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল পরিবেশ চায় তারা।
এদিকে বিএনপির পর বুধবার এনসিপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যুতে নানা আলাপ করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর কূটনৈতিকরা। বৈঠকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কূটনীতিকরা এনসিপির নির্বাচনী প্রস্তুতি, তরুণ ও প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে ভোট প্রদানের আগ্রহ, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।
এছাড়া আগামী নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার সদস্য দেশগুলো সর্বোচ্চ সংখ্যক নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন কূটনীতিকরা এবং এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মন্তব্য করুন