তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে ওমানের সঙ্গে দ্বিতীয় দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। জি-টু-জি ভিত্তিতে করা এই চুক্তির আওতায় ১০ বছর মেয়াদি অতিরিক্ত শূন্য দশমিক ২৫ থেকে এক দশমিক ৫ এমটিপিএ (মিলিয়ন টন পার এনাম) এলএনজি আমদানি করা হবে।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে পেট্রোবাংলার বোর্ড সচিব রুচিরা ইসলাম এবং ওমানের পক্ষে ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
উভয় দেশের সরকারি পর্যায়ে ১০ বছর মেয়াদি বছরে এক থেকে দেড় মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে পেট্রোবাংলা ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের (বর্তমান নাম ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেডের) সঙ্গে ২০১৮ সালের ৬ মে এলএনজির সেলস অ্যান্ড পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এসপিএ) প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে ওকিউটি বর্তমানে বছরে এক এমটিপি (১৬ কার্গো) এলএনজি সরবরাহ করছে। জি-টু-জি ভিত্তিতে কোম্পানিটি দ্বিতীয় চুক্তির আওতায় ১০ বছর মেয়াদে (২০২৬ সালে ৪ কার্গো এলএনজি, ২০২৭ থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ১৬ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৯ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ২৪ কার্গো এলএনজি যা কম-বেশি ১.৫ এমটিপিএ এলএনজির সমতুল্য) এলএনজি সরবরাহ করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কাতার গ্যাসের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি (২০১৮-২৩) এক দশমিক ৮ থেকে দুই দশমিক ৫ এমটিপিএ এলএনজি (বর্তমানে ২.৫ এমটিপিএ, ৪০ কার্গো এলএনজি) এবং চলতি বছরের ১ জুন থেকে কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসির সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি (২০২৬-৪০) দ্বিতীয় চুক্তিতে অতিরিক্ত এক দশমিক ৫ এমটিপিএ এলএনজি আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যমান দুটি চুক্তির আওতায় তিন দশমিক ৫ থেকে চার এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। বিদ্যমান দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে সহজেই ৬.৫ এমটিপিএ এলএনজি গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। সে হিসেবে আরও ২.৫-৩.০ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা যেতে পারে। এ ছাড়া মহেশখালীতে ৩য় এফএসআরইউসহ পায়রায় একটি এফএসআরইউ স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন করা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই এলএনজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বাংলাদেশ গ্যাস অনুসন্ধান কাজ জোরদার করেছে। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য পিএসসিকে হালনাগাদ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি ওমানসহ সংশ্লিষ্টদের আগত পিএসসিতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফ্ফার আলবুলুসি, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ওকিউটির নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন