বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের দিন ঢাকাসহ সারা দেশে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাস মালিক সমিতি। রাজধানীতে মাঝে মধ্যে দু’একটি বাস চলতে দেখা গেলেও আন্তঃজেলায় পুরোপুরি বন্ধ ছিল। সড়কে বাস না থাকার জন্য যাত্রী সংখ্যা কম থাকাকে দায়ী করেছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
রোববার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বাস মালিক সমিতি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ সালে সড়কে পাঁচ হাজার গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তখনও কিন্তু আমরা রাস্তা সচল রেখেছি। গতকালকে আপনারা যে প্রশ্ন করেছেন সে প্রসঙ্গে বলেছি, সাধারণত বিএনপি এরকম কর্মসূচি দিলে নাশকতা করে। নাশকতার ভয়ে কেউ কেউ গাড়ি না চালাতে পারে। কিন্তু আমাদের নির্দেশ ছিল স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চলাচল করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, মালিকরা সকাল থেকে গাড়ি বের করেছে। যাত্রী না থাকার ফলে গাড়ির সংখ্যা কম ছিল। দূরপাল্লার গাড়িও বের হয়েছে, শহরের গাড়িও বের হয়েছিল। কিছু গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্টাফ হত্যা করা হয়েছে। ফলে একটু তো ভয় কাজ করে। শুধু আজকে না বিএনপি সব সময় এই ধরনের কাজ করে আসছে। আমরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের কর্মসূচিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখব। দুই দিনে মোট ১১টি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানান খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যখন বিএনপি সন্ত্রাস করল, তখন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছি এবং গাড়ি চালু রেখেছিলাম। এই গাড়ি চালু রাখার মধ্য দিয়ে তখন বাংলাদেশে একটা শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম এই ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
তিনি বলেন, পর্দার আড়ালের থাবা আরেকবার উন্মোচিত হলো। তারা আরেকবার গাড়ি পুড়িয়ে মানুষ পুড়িয়ে প্রমাণ করল তাদের চরিত্রের আর কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমরা এর আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি করেছিলাম একটা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে এই ঘটনাগুলোর বিচার করেন। তাহলে এই ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটবে না। কিন্তু সে যদি না করার জন্য তারা আজকে এই সুযোগটা আবার পেল। এই ঘটনায় আমরা নিশ্চুপ বসে থাকতে পারি না। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মালিকদের গাড়ি পুড়িয়ে এবং শ্রমিকদের পুড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি তৈরি করবেন এটা কোনোদিন হতে পারে না এবং আমরা সেটা হতে দেব না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার প্রমুখ।
এদিকে বরিশাল, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ দক্ষিণের পথে রাজধানী থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। একই চিত্র দেখা গেছে নৌ পথে। তবে ট্রেন চলাচল কার্যত স্বাভাবিক ছিল। নারায়ণগঞ্জ রুটে কয়েকটি ট্রেন বিলম্বে আসা যাওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
মন্তব্য করুন