রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার আগারগাঁও এলাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনসহ ঢাকার প্রতিটি আঞ্চলিক কার্যালয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন এলাকায় বেশ কয়েকটি স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিক সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়কে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনকে কেন্দ্র করে যত ধরনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রয়োজন সবই আমরা গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের যত ধরনের কার্যালয়ে রয়েছে। তারপরও রাজনৈতিক দলের রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা নেই। তারা তাদের কর্মসূচি পালন করবে। বর্তমান সরকার কোনো দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে না। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কেউ যদি বাস পোড়ানো, গাড়ি ভাংচুর করার চেষ্টা করে এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কেউ যদি অরাজকতা করার চেষ্টা করে। নগরবাসীর জীবন যাত্রায় বিঘ্ন করার চেষ্টা এবং নগরবাসীর মধ্যে আত্মার আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে ডিএমপি জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। বিন্দুমাত্র নাশকতা অরাজকতা সহ্য করা হবে না।
সন্ধ্যা হলেই বাসে আগুন কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে বিপ্লব কুমার বলেন, বাসে আগুনের ঘটনা ঘটছে অবরোধের আগে। অবরোধ ছিলো আজ। কিন্তু অবরোধের আগেই বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাসে আগুন দেওয়া ফৌজদারি অপরাধ। তাদের টার্গেট সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। এই আতঙ্ক সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হয়েছে। বাস পোড়ানো কোনো রাজনীতির অংশ হতে পারে না। এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বহুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি নাশকাতায় যুক্ত ১৪ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা যাদের নাম পেয়েছি ধরে ধরে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যারা বাইরে থেকে নাশকতা করছেন তারা যদি ভাবেন যে অধরা থাকবেন তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। পুলিশের নেটওয়ার্ক আজ অথবা কাল আসতে হবে। নাশতাকারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে। নাশকতাকারী উচ্চ পর্যায়ের হোক অথবা নিম্ন পর্যায়ে হোক কেউরে ছাড় দেওয়া হবে না সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আগুন নিভানোসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডকে এডিট করে অনলাইনে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজব প্রতিরোধে ডিএমপির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার বলেন, গুজব একটি অনৈতিক ও অপরাধ মুলক কাজ। পুলিশের পজিটিভ নিউজ এডিট করে নেগেটিভ বা গুজব হিসেবে প্রচার করা। এটা একটি অনৈতিক কাজ। যারা নাশকতা করছে, বাসে আগুন দিচ্ছে তারাই কিন্তু এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় না গিয়ে নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে। অনেক কে শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ডিএমপি পুলিশের পাশাপাশি সিটিটিসির সাইবার, ডিবির সাইবারটিমসহ আমাদের প্রতিটি টিম দিন রাত সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি সকল নাশকারীদের আইনের আওতায় এনে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি আগানো হচ্ছে। কেউ রে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
বিএনপির অবরোধ চলছে এরমধ্যে তপশিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছে। এরমধ্যে কোনো সহিংসতা হওয়ার সঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপি এ উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা গণমাধ্যমে জেনেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিবেন এবং তফসিল ঘোষণা করবেন। তফসিল ঘোষণার পরবর্তীতে নির্বাচনকে এক দিকে রেখে নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে কথা বলি তাহলে বলব। ঢাকাবাসীকে নিরাপদ রাখতে যত ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। ডিএমপি সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কেউ যদি মিছিল করার নামে নাশকতা করার চেষ্টা করা হয় এবং সাধারণ মানুষের জীবন যাপনে বিঘ্ন করার চেষ্টা করা হয় তাহলে কেউরে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না৷ আইনের মধ্যে থেকে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় আমরা সকল ব্যবস্থা নিয়েছি এবং সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছি।
মন্তব্য করুন