সিগারেট কোম্পানিগুলো তরুণদের ধূমপানে নানাভাবে আকৃষ্ট করছে। আইন ভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন প্রচারের পাশাপাশি, কৃষকদের প্রণোদনা, রেস্টুরেন্টে ধূমপানের আলাদা স্থান তৈরিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে দূত নিয়োগ করছে। যার মূলে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও মুনাফা লাভ। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে দুটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানিসহ দেশীয় কোম্পানিগুলো।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে এসব তথ্য।
এসময় বক্তারা বলেন, ২০০৫ সালে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ‘ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ প্রণয়ন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি জারি করে সরকার। এ আইনের অন্যতম লক্ষ্য- তামাকজাতদ্রব্যের ব্যবহার কমিয়ে আনাসহ নতুনদের তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা। ধারা-৫ এ তামাকজাতদ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে তামাক কোম্পানিগুলো আইন ভঙ্গসহ অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। মুনাফা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রলোবন বৃদ্ধ করে বিক্রেতাদের উৎসাহিত করছে। এমতাবস্থায় ১০ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা)।
১০ দফা প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে-
১. আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করার জন্য কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদ্যোগ গ্রহণ। ২. আইন অমান্যকারী দোকানগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা। ৩. নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ৪. দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী চূড়ান্ত করা। ৫. তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষায় এফসিটিসির অনুচ্ছেদ ৫.৩ অনুসারে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ গ্রহণ করা। ৬. ‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি’ দ্রুত চূড়ান্ত এবং দেশব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করা। ৭. টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ সক্রিয় করা, কমিটির ত্রৈমাসিক সভা নিয়মিতকরণ, সভার সিদ্ধান্তগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। ৮. আইন লঙ্ঘনের দায়ে তামাক কোম্পানি/প্রতিনিধিকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি জেল প্রদান। ৯. তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মনিটরিং কার্যক্রমের সাথে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করা। ১০. প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
সংবাদ সম্মেলেনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ।
এ ছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, তামাক নিয়ন্ত্রক গবেষক নাসির উদ্দিন শেখ, টিসিআরসি প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা, স্কোপ নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টে প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্যসহ আরও অনেকে।
মন্তব্য করুন