প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে। সরকার নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সম্ভব সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৩তম জন্ম ও ৯১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বেগম রোকেয়া দিবস-২০২৩’ এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাঙালি নারী শিক্ষার অগ্রদূত এবং সমাজ সংস্কারক বেগম রোকেয়ার অবদানের স্মরণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম রোকেয়ার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে, অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি। বেগম রোকেয়া যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সে অনুযায়ী নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে তার সরকার অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছি, তাদের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছি।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অর্থনৈতিক সচ্ছলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা সবসময় চেষ্টা করে আসছি, নারীরা যাতে তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে যা তাদের ক্ষমতায়িত হতে সাহায্য করবে। নারীরা নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারায় তার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার আগে দেশে নারীদের বিচারক হওয়ায় আইনি বাধা ছিল। জাতির পিতার উদ্যোগে এই আইনি বাধা উঠে গেলে নিম্ন আদালতে প্রথম নারী বিচারপতি হন নাজমুন আরা সুলতানা। সরকার পরবর্তীতে নাজমুন আরাকে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একজন নারীকে দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এখন আমাদের নারীদের বিচরণ সব জায়গায়। যেমন তারা রাজনীতিতেও আছে, অর্থনীতিতে আছে, পররাষ্ট্রনীতিতে আছে, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ে, সশস্ত্র বাহিনী, সেই সাথে বর্ডার গার্ড সব ক্ষেত্রে কিন্তু নারীদের প্রবেশ সুযোগ আছে এবং তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। সাংবাদিকতা, তথ্য ও প্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা সব ক্ষেত্রে এখন মেয়েরা তাদের দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে, বাংলাদেশের জন্য সুনাম নিয়ে আসছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আপনারা জানেন, এশিয়ার শীর্ষে এখন বাংলাদেশের নারীরা, সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে গর্বের বিষয়। জেন্ডার সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে আজ সপ্তম, আমাদের স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের ৭০ শতাংশ নারী, তৈরি পোশাকশিল্পে ৮০ শতাংশের বেশি নারী কর্মী। আমাদের দেশটাকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। যেখানে নারী-পুরুষ সবাইকে সমানভাবে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
মন্তব্য করুন