কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বর্ণিল উৎসবে রঙিন বই পেল শিক্ষার্থীরা

রাজধানীতে কেন্দ্রীয় বই উৎসবের মাধ্যমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। ছবি : কালবেলা
রাজধানীতে কেন্দ্রীয় বই উৎসবের মাধ্যমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। ছবি : কালবেলা

নতুন বছরের প্রথম দিনে বই উৎসবের রেওয়াজ ধরে রেখেছে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন। সোমবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল সরকারি (সকাল-বিকাল) প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কেন্দ্রীয় বই উৎসবের মাধ্যমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা বিভিন্ন সাজে উৎসব প্রাঙ্গণে আসেন।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় বই উৎসবে ২০টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ২৮ জনের বইয়ের সেট তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে তিনি বই উৎসবের উদ্বোধন করেন।

নতুন বই নিতে আসা মিরপুর ন্যাশনাল সরকারি (সকাল-বিকাল) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র তানজিল শেখ বলেন, উপমন্ত্রীর হাত থেকে বই নিতে পেরে আমি খুবই খুশি। নতুন বছরের নতুন বই পাওয়ার যে আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না।

একসঙ্গে সব বই পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত ওয়াক আপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অথৈ সিংহ জানায়, তৃতীয়বারের মতো পহেলা জানুয়ারি নতুন বই পেয়েছে সে। তবে, বই উৎসবে এবারই প্রথম যোগ দেওয়া। সে কারণে তার আনন্দের পরিসীমা নেই।

মিরপুরে বই উদ্বোধনের পর একযোগে সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুরু হচ্ছে বই উৎসব। যদিও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন নেই। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আয়োজনে চেষ্টায় ঘাটতি রাখেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বই উৎসব অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, নতুন বই শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নতুন বছরের উপহার। নতুন বই শিশুকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ শিশুকে বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা শিশুর মনোজগতে বিস্ময় তৈরি করে। শিশুমনের এ আকাঙ্খাকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে বই বিতরণের সূচনা। সময়ের পরিক্রমায় এটি এখন বই উৎসবে পরিণত হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার পুরোনো ধারার শিক্ষার খোলনলচে পাল্টে এমন এক নতুন শিক্ষার বীজ বপনের কাজে হাত দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীর মস্তিষ্ক ও পিঠ থেকে মুখস্থবিদ্যার বোঝা ঝেড়ে ফেলে তাদের কৌতূহল, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগাবে ও নেতৃত্বের। গুণাবলি তৈরিতে উপযোগী করে তুলবে। সে নিজেই নানা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে, তা মোকাবিলা করে অভীষ্ট গন্তব্য পৌঁছাবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৯ জন, প্রাথমিক স্তরের এক কোটি ৮০ লক্ষ ৭০ হাজার ৫৯৪ জন এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৮৪ হাজার ৪৭৩ জন। সর্বমোট ২ কোটি ১২ লাখ ৫২ হাজার ৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬০৬ টি বই বিতরণ করা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড জানিয়েছে, ২০১০ সাল থেকে শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের বই তুলে দেওয়ার সরকারের এ উদ্যোগটি ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। ১৩ বছরে সোয়া চার কোটি শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৪৫০ কোটি বই, যা সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিরল দৃষ্টান্ত।

এদিকে, মাধ্যমিকের কোনো কেন্দ্রীয় আয়োজন না থাকলেও সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশে বই বিতরণ চলছে। বিকেল পর্যন্ত বই বিতরণের কার্যক্রম চলবে। সব শিক্ষার্থী বই হাতে ফিরবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এনসিটিবি জানিয়েছে, মাধ্যমিকে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির এক কোটি চার লাখ ৯০ হাজার ১০৭ জন, দাখিলের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৮ জন, ইংরেজি ভার্সন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির এক লাখ ৭৩ হাজার ৮৫৫ জন, কারিগরির ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির দুই লাখ ৭১ হাজার ৯৫২ জন, দাখিল ভোকেশনালের ছয় হাজার ১৫ জন ও ব্রেইল পদ্ধতির ৭২৪ জন নতুন বই পাবে। সর্বমোট তিন কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৪ জন শিক্ষার্থী পাবে বিনামূল্যে নতুন বই।

জানা গেছে, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে এবার নতুন কারিকুলামে বই যাবে। এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরিতে দেরি হওয়ায় এই দুটি বইয়ের ছাপা কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। তাই এই দুটি শ্রেণির বই পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই প্রায় শতভাগ উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিকের কোনো শিক্ষার্থী হয়ত দুই শ্রেণির বই পাবে না, কিন্তু একদম খালি হাতে ফিরে যাবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রস্রাবের রং কারণ ছাড়াই ঘোলাটে, এটা কীসের ইঙ্গিত

জাল ভোটার কার্ড বিতর্কে তদন্তের মুখে তিন দক্ষিণী অভিনেত্রী

বরগুনায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়া গাছ রোপণ

এইচএসসি পরীক্ষায় আমিরাতে বাংলাদেশি দুই প্রতিষ্ঠানের সাফল্য 

পৃথিবীর সবচেয়ে দামি পালক কোন পাখির?

চাঁদপুরে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপযাপন / সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের লেখনীর বিকল্প নেই : সলিম উল্লাহ

লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা

ফ্যাসিস্টদের আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না : সালাহউদ্দিন

লালমনিরহাটে আনন্দঘন পরিবেশে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

কালবেলার সংবাদ পাঠকদের কাছে সহজবোধ্য ও গ্রহণযোগ্য : জেলা ম্যাজিস্ট্রেট

১০

সংসদ ভবনে ঢুকে পড়া জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টায় পুলিশ 

১১

বিশ্বকাপের শেষ ট্রেন ধরল আমিরাত, চূড়ান্ত ২০ দলের তালিকা প্রকাশ

১২

সার কীটনাশক সিন্ডিকেটের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হবে : ফারুক হাসান

১৩

যেসব জায়গায় ফোন রাখলেই ক্যানসার ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে

১৪

সুনামগঞ্জে কালবেলার তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৫

ফিলিপাইনে আবারও আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প

১৬

নাটোরে কালবেলার তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন

১৭

কসবায় উৎসবমুখর পরিবেশে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৮

বৃষ্টি-তাপমাত্রাসহ আবহাওয়া অফিসের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস

১৯

যমজ সন্তান কেন হয়, যা বলছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ

২০
X