দৈনিক কালবেলায় সোমবার (১৭ অক্টোবর) ‘উৎপাদনের মতোই গুরুত্ব দিতে হবে খাদ্যপণ্যের সংরক্ষণে’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত থেকে বাছাইকৃত মতামত প্রকাশ করা হলো।
বাংলাদেশ চাল, মাছ, মাংস এবং শাকসবজি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও গম, মসলা, ভোজ্যতেল, তৈলবীজ, ডাল, চিনি ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা এখনো রয়ে গেছে। পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় (পরিবহন, শ্রমিক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, কীটনাশক, সার, রক্ষণাবেক্ষণ) বৃদ্ধি এবং সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ মানুষকে উচ্চমূল্যে ভোগ্যপণ্য কিনতে হচ্ছে। ফলে সার্বিক মূল্যস্ফীতির সঙ্গে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা কমেছে ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। একই সময়ের তুলনামূলক বিচারে চলতি বছর এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ০ দশমিক ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ কমেছে ভোগ্যপণ্যের আমদানি।
এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে গত ১১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে চাল, গম ও ধানের ১৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টন মজুদ ছিল। এ পরিস্থিতিকে সন্তোষজনক বলে মনে করছেন গবেষক-বিশ্লেষকরা।
কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৬ হাজার টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে। গত ১৫ বছরে ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৯ গুণ, আলু ২, ডাল ৪, তেলবীজ ২ দশমিক ৫ ও সবজি ৮ গুণ। কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের এ সাফল্য বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। ধান, পেঁয়াজ, পাটসহ ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।
খাদ্যপণ্যের সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে মোজাম্মেল হোসাইন লিখেছেন, ‘খাদ্য-পণ্য উৎপাদনে সরকারকে ভর্তুকি প্রদান করতে হবে এবং পন্য সংরক্ষণের জন্য থাকতে হবে যথাযথ ব্যবস্হাপনা। মনে রাখতে হবে, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। সিন্ডিকেট তথা মধ্যস্বত্বভোগীদের কবল থেকে ভোক্তাদের মুক্ত করতে হবে।’
জাবেদ বাবু লিখেছেন, ‘আলু সংরক্ষণ করার জন্যে হিমাগার বানিয়েছিল। তাই আলু এখন ৫০ টাকা। হিমাগার না বানালে আলুর দাম সস্তা থাকত। চাল ছাড়া কোনো কিছুই সংরক্ষণ বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না। কারণ যারা সংরক্ষণ করে তারা সৎ ব্যবসায়ী না। একমাএ চাল সংরক্ষণ করে রাখা ঠিক আছে। সাথে গম।’
খাদ্যপণ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে নীরব রব লিখেছেন, ‘দেশে সংরক্ষণের অভাবে বছরে ৩০ শতাংশ খাদ্যপণ্য নষ্ট হয়। তাই পচনশীল খাদ্যপণ্য যেমন আলু, মরিচ, বেগুন, পটোলসহ বিভিন্ন সবজি যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য উপজেলাভিত্তিক হিমাগার স্থাপন করা দরকার। উপজেলাভিত্তিক হিমাগার স্থাপন করতে পারলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।’
ইমাম হোসেন ইমন লিখেছেন, ‘দিন দিন বাড়ছে সব নিত্য পণ্যের দাম। আমরা সাধারণ জনগণ কষ্টে আছি। দুর্নীতির উন্নয়ন সব প্রকল্প বাদ দিয়ে খাদ্য সংরক্ষণে নজর দেওয়া জরুরি।’
মো. সোহানুর রহমান সোহান লিখেছেন, ‘সবাই ক্রয় করে খাওয়ার মন মানসিকতা পরিবর্তন করে, নিজেদের চাহিদা মতো উৎপাদনের দিকে খেয়াল দিতে হবে।’
গ্রন্থনা : উজ্জ্বল হোসেন
মন্তব্য করুন