বাংলাদেশের দ্বিতীয় রূপান্তরের যে অধ্যায় শুরু হলো তা ইতিহাসে বিরল। এই নতুন পথের গন্তব্য একটি গণতান্ত্রিক প্রথায় সুশ্বাসিত, বৈষম্যহীন, প্রগতিশীল সমাজ।
নির্বাচিত সরকার যে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হতে পরে তা বাংলাদেশিদের শিখিয়েছে বিগত সরকার। অনির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক হতে পারে কি না তা এখন দেখার সুযোগ করে দিলো আমাদের শিক্ষার্থীরা। আশা করি তারা নিজেরাও গণতান্ত্রিক চর্চা শক্তিশালী করায় পূর্ণ সচেতন থাকবেন এবং সহযোগী হবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারের বয়স আজ নয় দিন মাত্র। প্রাতিষ্ঠানিক ধ্বংসস্তূপের থেকে দেশ পরিচালনা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন। আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরে সরকারকে একটু সময় দিতে হবে ঘর গুছানোর জন্য।
সরকারের সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও পদক্ষেপের সঙ্গতির আলোচনা ও সমালোচনার অনুকূল পরিবেশ এখন গড়ে উঠছে। এখান থেকে শুরু হোক গণতান্ত্রিক চর্চা।
সরকারের স্বচ্ছতা বাড়ানোর পথে এখন আর বাধা নেই। এই ক্রান্তিকালে নাগরিকরা জানতে চায় কী হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, কোথায় যাচ্ছি? মুক্ত হয়েছি কিন্তু আগামীতে মুক্তির ধারাবাহিকতার নিশ্চয়তা কতটুকু?
স্বচ্ছতা বাড়ানোর জন্য সরকারের সাথে সাধারণ মানুষের সংযোগের একটি নিয়মিত ব্যবস্থা দরকার। উপদেষ্টারা অনেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এটা এক ধরনের সংযোগ। সরকার প্রধানের দফতর থেকে নিয়মিত ব্রিফিং সেই তুলনায় বেশি খাঁটি। এমন উত্তম চর্চা অনেক গণতান্ত্রিক দেশে আছে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার গণমাধ্যমের সম্মুখীন হলে ভালো হতো। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা নিজে আসলে আয়োজনটা সহজ হয়ে যায়। তেমন কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন হবেনা। কারণ উপস্থিত বক্তা তো বটেই, সঞ্চালনেও উনি পারদর্শী। উনার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যপত্রই যথেষ্ট।
বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে ওনার প্রতিটি ব্রিফিং-এ আসা সম্ভব হবেনা। সেই ক্ষেত্রে ওনার প্রেস সচিব উপস্থাপনা ও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন। খোলা মেলা পরিবেশে প্রেস ব্রিফ হতে হবে। এটি যদি চাটুকারিতার মঞ্চে পরিণত হয় তাহলে সব বিফলে যাবে।
ড. জাহিদ হোসেন : অর্থনীতিবিদ
মন্তব্য করুন