কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এবি পার্টির ১০ দফা সুপারিশ

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি : কালবেলা
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি : কালবেলা

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, বাংলাদেশ একটি নদী বিধৌত অঞ্চল হওয়ায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে চরাঞ্চল, দ্বীপ এলাকা, পার্বত্য অঞ্চলসহ প্রচুর দুর্গম এলাকা রয়েছে যেখানে বিদ্যুতের মূল সংযোগ থেকে ওইসব এলাকার জনগণকে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর বাইরে পরিবেশগত জটিলতায় গোটা পৃথিবীই নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে সরকারের করণীয় বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, এখন পরিবেশ দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সার্বিক বিবেচনায় আগামী একদশকে বিদ্যুতের চাহিদা দ্বিগুণ হতে পারে। যার ফলে বহু নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেক বেশি। এমতাবস্থায় ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার ফুয়াদ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে নিম্নোক্ত ১০ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এ প্রস্তাবনাগুলো হলো : ১. দীর্ঘ মেয়াদে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ছাড়া আমাদের অন্য কোনো বিকল্প নেই। তাই এ ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকে কোনোভাবেই বাধা দেওয়া যাবে না। যেসব প্রকল্প LOI (Letter of Intent বা সরকার থেকে কাজের ইচ্ছাপত্র) প্রাপ্ত হয়েছে সেগুলোতে ‘NO electricity, No pay’ ভিত্তিতে উৎপাদন সচল করতে হবে, তার মানে কোনো ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দেশের টাকা অপচয়ের সুযোগ নেই। প্রয়োজনে পুনঃ দরকষাকষি করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন নিশ্চিত করে মহাদুর্নীতির প্রকল্পগুলো আর নবায়ন না করে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে হবে। প্রায় ২৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ৩৪টি কোম্পানিকে, যাদের অধিকাংশে বিদেশি বিনিয়োগ আছে, কাজ চলমান রাখার অনুমতি দিতে হবে। অনেক কোম্পানি এরই মধ্যে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে; এতে বিদেশি বিনিয়োগ অনুৎসাহিত হবে, ব্যবসাবান্ধব দেশের তালিকাতে আমরা পিছিয়ে পড়ব, আর হাজার হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রকে গচ্চা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে দেশি এবং বিদেশি আদালতে। প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ, ৬০ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের এবং দেশের বদনাম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

২. নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূল্য কমাতে সরকারি উদ্যোগে অনাবাদি খাসজমি ও চরাঞ্চলগুলোকে বাছাই করে সেখানে সঞ্চালন লাইন তৈরি করে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চারটি চরে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যে যে সম্ভাবনা পরীক্ষা চলমান সেটা দ্রুত শেষ করে সেখান থেকে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে।

৪. লাখ লাখ ডিজেলচালিত সেচের মেশিনকে সোলার পাম্পে রূপান্তরিত করতে হবে, এতে যেমন উৎপাদন খরচ কমবে, ঠিক তেমন আমাদের ডলার দিয়ে বিদেশ থেকে ডিজেল কম কিনতে হবে।

৫. গ্যাস/বিদ্যুতের কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি ছাদ মালিক ও বিনিয়োগকারী কোম্পানির সাথে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে নেট মিটারিং কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে বাড়ির ছাদে স্থাপিত সোলার থেকে হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে।

৬. দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুতায়িত গাড়ি উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে, সেক্ষেত্রে উদ্যোক্তা এবং গ্রাহকদের সমন্বিত বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করতে হবে।

৭. নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ব্যবহৃত সোলার প্যানেল, ইনভার্টারসহ প্রয়োজনীয় পণ্যে কর শূন্যে বা ন্যূনতম পরিমাণে নামিয়ে আনতে হবে।

৮. দরকার হলে বাংলাদেশকে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে ‘FEED and Tariff’ দিয়ে দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে হবে।

৯. ভুটান ও নেপাল থেকে ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন করে কীভাবে কম মূল্যে জলবিদ্যুৎ আমদানি করা যায়, যদি কখনো একান্ত প্রয়োজন হয়, তার পদক্ষেপ নিতে হবে।

১০. অফ পিক আওয়ারে (দিনের তুলনামূলক কম ব্যস্ত সময়ে) কম মূল্যে বিদ্যুৎ ব্যাটারি স্টোরেজের মাধ্যমে মজুত করে ব্যস্ত সময়ে ব্যবহার, স্ট্যাবল ট্রান্সমিশন সিস্টেম ও চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, আহমদ বারকাজ নাসির, কেফায়েত হোসেন তানভীর, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, সুমাইয়া শারমিন ফারহানাসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এসএমসিতে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

সিদ্ধিরগঞ্জে বিস্ফোরণে নাতির পর নানির মৃত্যু

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন আজ

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

২৬ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

ডাকসু নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু আজ

তিন সহযোগীসহ ‘মাদক সম্রাট’ শাওন গ্রেপ্তার

ফের সৈকতে ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২৬ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১০

পাঁচ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

১১

ক্ষমতায় গেলে এক কোটি কর্মসংস্থান করবে বিএনপি : টুকু

১২

ড. ইউনুস কি ভালো ভোট করতে পারবেন : মান্না

১৩

ষড়যন্ত্রকারীদের সতর্কবার্তা দিলেন আমিনুল হক

১৪

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, চাচাতো চাচা রফিকুল রিমান্ডে 

১৫

জবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা মনিটরিং সিস্টেম চালু ১ সেপ্টেম্বর

১৬

স্থপতি মোশতাক আহমেদের বাবার মৃত্যুতে রাজউক চেয়ারম্যানের শোক

১৭

আফ্রিদির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি, উকিল খুঁজছেন স্বপন

১৮

মুন্সিগঞ্জে ‘গত আগস্টে লুট করা অস্ত্র’ দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা

১৯

গরিবের স্বপ্নেই থাকে ইলিশ

২০
X