ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী (পীরে তরিকত) বলেছেন, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে কোনোরূপ সরকারই নির্বাচন পরিচালনা করে না। নির্বাচন পরিচালনা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ইসি সরকারের প্রভাবমুক্ত থাকবে। আর কমিশনকে নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। সুতরাং তত্ত্বাবধায়ক কিংবা কোনোরূপ সরকার নয়, বরং সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন ইসির অধীনে নির্বাচনই রাজনীতিতে সৃষ্ট সংকটের অবসান হতে পারে।
আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন এবং সন্ত্রাস- জঙ্গিবাদমুক্ত শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই সমাবেশ হয়। সকাল ১০টায় জনসভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৮ টার মধ্যে বায়তুল মোকাররমের আশেপাশের এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। নেতাকর্মীদের নারায়ে তাকবির ও নারায়ে রিসালাত এর মূহর্মূহু স্লোগানে গোটা এলাকা ধ্বনিত হয়।
ছৈয়দ বাহাদুর মোজাদ্দেদী বলেন, সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন অধিকতর সম্ভব। এদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের দৌড়ঝাঁপ তথা অযাচিত হস্তক্ষেপ কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার বাইরে থাকাবস্থায় বিদেশিদের কাছে একে অপরের বিরুদ্ধে নালিশ জানায়। বিদেশিদের ক্ষমতা মাড়ানোর সিঁড়ি হিসেবে বিবেচনা করে। এ সুযোগেই এরা এদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর স্পর্ধা দেখায়। যা নিতান্ত দুঃখজনক।
তিনি আগামী নির্বাচনে দুর্নীতিগ্রস্ত, ঋণখেলাপী, কালো টাকার মালিকদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়ার জন্যও তিনি রাজনৈতিক দলসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশ থেকে অর্থপাচারকারীদের চিহ্নিত পূর্বক পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ, দেশদ্রোহী স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের যাবতীয় চক্রান্ত- ষড়যন্ত্র বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বপ্রকার বৈষম্য দূর করাসহ অভিন্ন শিক্ষানীতি প্রণয়ন, কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী যে কোনো প্রকার আইন প্রণয়ন থেকে বিরত থাকা এবং ব্যাংকিং সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানির উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ জাতীয় উন্নয়ন অগ্রগতির অন্যতম প্রধান অন্তরায়। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে নাগরিক জীবন ওষ্ঠাগত। যা নিয়ন্ত্রণে সিণ্ডিকেট ব্যাবসায়ীদের রুখতে হবে। সাম্প্রতিকতালে কিশোরগ্যাংয়ের অস্বাভাবিক দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে বৃহৎ দুটি দলের পারস্পরিক যুদ্ধাংদেহী অবস্থান ক্রমাগত নির্বাচনী পরিবেশকে কলুষিত করছে। এতে ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়ে জনগণ ভোটকেন্দ্র বিমুখ হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কোনো বিকল্প নেই। যেজন্য সকল পক্ষেরই পারস্পরিক ঐকমত্য জরুরি।
ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর সভাপতিত্বে ও স.ম হামেদ হোসাইন এবং এ এম মঈনউদ্দীন চৌধুরী হালিমের যৌথ পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন- দলের কেন্দ্রীয় নেতা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, আল্লামা মোশাররফ হোসেন হেলালী, ছৈয়দ নাছেরুল হক চিশতি, অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দীন, কাজী জসিম উদ্দীন, এ এম একরামুল হক, জিল্লুল করিম আল কুতুবী, অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী, আল্লামা সালাহউদ্দিন লতিফী, ছৈয়দ মাহমুদ শাহ মোজাদ্দেদী, মাওলানা আবু হানিফ মধুপুরী, সালেহ আহমদ আনসারী, তাজুল ইসলাম চাঁদপুরী, নাজমুল হক আখন্দ, ইমদাদুল হক পাটোয়ারী, এইচএম মুজিবুল হক শাকুর, রফিকুল ইসলাম জাফরী, জসিম উদ্দিন তৈয়বী, তরিকুল হাসান লিংকন, ছৈয়দ হাফেজ আহমদ, বদরুদ রেজা সেলিম, কুতুবুল হাসান চৌধুরী, মাওলানা সামসুদ্দোহা, ইসলামিক যুব ফ্রন্ট বাংলাদেশের আহ্বায়ক মাওলানা মনির হোসাইন, ইসলামী ছাত্র সেনা কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফরিদ মজুমদার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন