রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তারা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন : রিজভী

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতর থেকে মনে হয়, তারা তো নির্বাচন চায় না। তারা একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে- এ রকম নানা কথা বলছেন। কিন্তু কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলছেন না, অমুক মাসেই নির্বাচন হবে।

রোববার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকাস্থ নীলফামারী জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে রিজভী বলেন, আজকে মানুষ কিন্তু নানা কথা ভাবছে, দোসরদেরকে দুধ-কলা দিয়ে পোষা হচ্ছে। তারা (দোসররা) হয়তো আপনার সরকারকে বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে বুঝাচ্ছে। তারা বুঝাচ্ছে যে, বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে হবে। বিএনপির প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে আপনার সরকারের ভূমিকা মনে হচ্ছে এ রকম। আপনার সরকারের ভেতর থেকে মনে হয়, তারা তো নির্বাচন চায় না। একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। ডিসেম্বরে, না হলে ফেব্রুয়ারিতে বা জুনে- এ রকম নানা কথা বলছেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আজকে সরকার দিনকে দিন তালবাহানা করছে। কিন্তু দেশ তার যে ’৭১-এর অহংকার এবং ’২৪ এর ৫ আগস্টের যে অহংকার, সে অহংকার মিলিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা অর্থাৎ বহুদলীয়, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা- এটাতো এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। সেই সুযোগ অনেকে নস্যাৎ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী আরও বলেন, আজকে মানবিক করিডরের কথা বলছেন। এই মানবিক করিডরের কথা আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে বলতে হচ্ছে। আপনার জনগণের ম্যান্ডেট নেই, আপনি নির্বাচিত নন। আজকে সব দিক থেকে এই কথা ধ্বনিত হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়া কী হবে, আমাদের সার্বভৌমত্বের অবস্থা কী হবে- এটা জনগণের কাছে কোনোভাবেই খোলাসা করেননি। অনির্বাচিত সরকার অনেক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আপনার সরকারের প্রতি প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু সেই সমর্থনের মধ্যে আপনাদের যে বলীয়ান হওয়ার কথা, সেই বলীয়ান আপনারা হতে পারেননি। কারণ, জনগণের সঙ্গে আপনারা কানামাছি খেলা খেলছেন। এত লুকোচুরি করছেন যে, কানামাছি খেলতে গিয়ে জনগণের কাছে আপনারা সন্দেহের মধ্যে পড়ছেন।

তিনি বলেন, আজকে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করে দিয়েছে। আমাদের মালামাল ভারতের পোর্ট দিয়ে অন্য দেশে যেত। কেন করেছে? আমাদের সঙ্গে তো কোনো বৈরিতা নেই। আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের (ভারত) সংকট তৈরি হয়েছে। সেটা তাদের দুই দেশের মধ্যকার বিষয়। তাহলে আজকে যে দিল্লি একের পর এক বাংলাদেশবিরোধী ভূমিকা রাখছে, আমরা তো সেই শেখ হাসিনার মতোই দেখছি। আপনাদের কোনো প্রতিবাদ নেই, কোনো উচ্চকণ্ঠ নেই। একইসঙ্গে এটা করলে আমাদের বিকল্প কী, এটাও তো জনগণের কাছে খোলাসা করা উচিত। তাদের মালামাল যাবে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে, আমাদের নৌপথ, সড়কপথ ব্যবহার করবে। কিন্তু আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট যে ব্যবস্থা ভারতের সঙ্গে ছিল, সেটা তারা বন্ধ করে দিল।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসল যে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন, সে যে অবৈধভাবে ক্ষমতা নিয়েছিল- সেটা প্রমাণ করার জন্য বিএনপির সমর্থক কিছু নেতাদেরকে জনগণের সামনে কলঙ্কিত করার জন্য তারা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। তার মধ্যে ছিল মিথ্যা মামলা। সেই মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছিল শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের নামে। রাজনৈতিক কারণে তুহিনকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। একই রকম ঘটনায় অন্যরা রেহাই পেলে তুহিন কেন পাবে না? আইন মন্ত্রণালয় যেখানে বলেছে যে, কোনো অসুবিধা নেই, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে এটি আটকে থাকার কথা নয়।

তিনি বলেন, আমরা তো বারবার বলি- আওয়ামী দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। যারা বিএনপিবিরোধী, বেগম খালেদা জিয়াবিরোধী, তারা প্রশাসনে আছে এবং তারা গিরগিটির মতো রঙ পরিবর্তন করছে। রং পরিবর্তন করে ওরা নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করছে এবং ওরা গণতন্ত্র, নির্বাচন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে দিতে চায় না। আমরা বলেছি, যারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙেছে, যারা সংবিধান থেকে মুছে দিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, তারা তো আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে, আজও চাকরি করছে। যে বিচারপতি আক্তারুজ্জামান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন, তিনি এখনো কীভাবে বিচারপতি থাকেন?

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদ আউয়াল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘বিআইটি মডেল’ বাস্তবায়ন দাবিতে উত্তাল ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক উৎসবমুখর নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় বিএনপি : প্রিন্স

তপশিল ঘোষণার পর জোট বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে : ফারুক

কুমিল্লায় ৩ খুনের নেতৃত্বে ছিলেন চেয়ারম্যান-মেম্বার

চালের দাম নিয়ে সুখবর দিলেন খাদ্য উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক ইসলামি সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সভা

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন : ধর্ম উপদেষ্টা

বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি না করার আহ্বান সাকির

বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে হামলা

আবুধাবিতে সাড়ে ৮৩ কোটি টাকার লটারি জিতলেন প্রবাসী বাংলাদেশি

১০

ব্লাকমেইল করে সাংবাদিকের কাছে চাঁদা দাবি

১১

বিমানের ডানা থেকে লাফ দিয়ে আহত ১৮

১২

ইবিতে মাস্টার্সে পুনঃভর্তি / ছাত্রদল নেতাদের বিশেষ বিবেচনা, অন্যদের ক্ষেত্রে বঞ্চনা!

১৩

তানভীরের ফাইফারে সিরিজে সমতায় ফিরল টাইগাররা

১৪

প্রজাতন্ত্র নির্মাণে নতুন রাজনৈতিক ইশতেহার প্রয়োজন: জেএসডি 

১৫

চসিক মেয়রের সঙ্গে কানাডার ফেডারেল এমপির বৈঠক

১৬

যে কারণে জোতার শেষকৃত্যে ছিলেন না রোনালদো

১৭

চাঁদাবাজির সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার কালবেলার সাংবাদিক

১৮

উল্টোরথে শেষ হলো রথযাত্রার মহোৎসব

১৯

আশুরায় শুধু কারবালার নয়, রয়েছে আরও যত ঘটনা

২০
X