অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় দলটি।
লিখিত বক্তব্যে দাবিসমূহ তুলে ধরে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, শেখ হাসিনার রাষ্ট্র দখলের আইন প্রয়োগ করে প্রশাসক নিয়োগ চলবে না। এই অবৈধ আইনে নিয়োগকৃত প্রশাসকদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে জাতীয় সংলাপ শুরু করতে হবে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করতে হবে। সরকারের সকল দপ্তর থেকে এনসিপির ছাত্র প্রতিনিধিদের পদত্যাগ করতে হবে। করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণ ও গ্রেপ্তার না করলে যমুনা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এজাজকে অপসারণের জন্য আমাদের দলের পক্ষ থেকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। সেই আল্টিমেটাম এখন পর্যন্ত চলছে।
এজাজের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ২০১৫ সালে দুইবার তিনি (মোহাম্মদ এজাজ) গ্রেপ্তার হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন। শুনেছি বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি উত্তর সিটির প্রশাসক পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া এজাজের তো কোনো যোগ্যতা নেই ওই পদে বসার।
তিনি বলেন, সরকার থেকে ছাত্র উপদেষ্টাদের একজন পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। কিন্তু তাদের নেক্সাসের আরও দু'জন উপদেষ্টা হিসেবে রয়ে গেছেন। তারা এখন ওই দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। সরকারে থাকা এই দুই উপদেষ্টার রাজনৈতিক স্বার্থের বিষয়গুলো সামনে এসেছে তাদের কথাবার্তা ও কাজের মাধ্যমে। এজন্য আমরা বলছি, তাদের পদত্যাগ সরকারের নিরপেক্ষতার জন্য খুবই প্রয়োজন।
নুর বলেন, গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকেই বলে আসছে, গণঅভ্যুত্থানের সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সরকারের আদলে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে। কিন্তু সরকার সেটিকে গুরুত্ব দেয়নি। শুরুতে জাতীয় সরকার করা হলে আজকে গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে এমন সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। কিন্তু একটি গোষ্ঠী ক্ষমতার লোভ সামলাতে না পেরে একটি একপাক্ষিক সরকার গঠন করেছে। যে সরকার এখনো পর্যন্ত দেশের আর্থ-সামাজিক দুরাবস্থার উন্নয়ন তো করতেই পারেনি, বরং রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অস্থিরতা দূর করতে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই এই উপদেষ্টা পরিষদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আরও জোরালো হবে। যা সরকারের জন্য অসম্মানের।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আব্দুজ জাহের, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোরশেদ মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন