দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
সোমবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জানা গেছে, বৈঠকের এজেন্ডায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের আলোচনা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতির সম্পর্কে করণীয় নির্ধারণ প্রসঙ্গে পর্যালোচনার বিষয়টি গুরত্বের সঙ্গে রাখা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন, প্রশাসনের কেন্দ্রস্থল সচিবালয়ের উত্তপ্ত পরিস্থিতির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা ও পর্যলোচনা করা হবে বলেও জানা গেছে।
এ ছাড়াও ভারতের সীমান্ত দিয়ে অব্যাহত পুশইন এবং চট্টগ্রামে ‘কেএনএফ’-এর ২০ হাজার ইউনিফর্ম উদ্ধারসংক্রান্ত বিষয়গুলো বৈঠকে অবগত করা হবে। পাশাপাশি বৈঠকে নিয়ম অনুযায়ী দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার (২৬ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, প্রতি বছরের মতো এবছরও মে মাসের শেষ সপ্তাহে গুম সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এ আন্তর্জাতিক সপ্তাহ। ২০০৯ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন। আমাদের হিসেবে উল্লিখিত গুমের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি হবে। এদের মধ্যে অধিকাংশ এখনও নিখোঁজ, অনেকেরই মৃতদেহ পাওয়া গেছে আবার অনেকদিন পর কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এটি বিগত আওয়ামী শাসনামলের একটি বর্বর দুঃশাসনের নমুনা। উল্লিখিত সংখ্যা গুম হয়ে যাওয়া পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত রিপোর্ট এর ভিত্তিতে, আর অনেক আতঙ্কিত পরিবারই রিপোর্ট করার সাহস পায়নি।
তারেক রহমান বিবৃতিতে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া ব্যক্তিদের ১০/১৫ বছরেও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের গুমের ঘটনাগুলোর সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছেন বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ। এছাড়াও গুমের শিকার হয়েছেন দেশের ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ মানুষও। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম আইন অনুযায়ী- কোনো ব্যক্তিকে গুম করা একটি মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ। মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহে আমি এই গুম হওয়া মানুষদের অসহায় পরিবারের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। আর কোনো ব্যক্তি যাতে গুমের শিকার না হয় সেজন্য রাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। আর যেন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের মতো অমানবিক ঘটনা না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে।
মন্তব্য করুন