চীন সফরে দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও উন্নত ও ঘনিষ্ঠ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৩০ জুন) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, পাঁচ দিনব্যাপী এ সফরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং চীন সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তারা। প্রতিটি বৈঠকে চীনা নেতারা বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার অবদান সসম্মানে ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, পলিসি ব্যুরোর সদস্য শি-লি-হংসং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাশাপাশি দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মেডিকেল ও স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চশিক্ষা, যোগাযোগ, আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি, এসএমই বিজনেস, ব্লু ইকোনমি উন্নততর প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে চীনের অধিকতর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে কথা হয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্বেচ্ছা এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে চীনের অধিকতর এবং কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছি। তারা এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছি এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো, পরিবেশ ও প্রযুক্তি উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছি। বাংলাদেশে শ্রমশক্তির সক্ষমতা, উন্নত বিনিয়োগ পরিবেশ ও বিনিয়োগের নিরাপত্তার বিষয়টিও আমরা ইতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করেছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিগত ১৭ বছরের অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সহনীয় করতে আমরা ঋণ পরিশোধ সময়সীমা বৃদ্ধি, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাব্যতার বিষয়েও তাদের সহায়তা চেয়েছি। যেটা তারা সহানুভূতির সাথে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল নির্মাণ, দেশের উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও রপ্তানি সুযোগ বৃদ্ধির বাস্তব পদক্ষেপ কুনমিংয়ে চারটি বিশেষায়িত হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সহজতর করা, চীন-বাংলাদেশের মাঝে স্থলপথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ, এগুলোও আমাদের আলোচ্য সূচিতে ছিল। এগুলো ইতিবাচকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে এই সফরের মাধ্যমে আমরা দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও উন্নততর ও ঘনিষ্ঠতর করার সুযোগ পেয়েছি। এই সম্পর্ক আগামীতে আরও প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে গত ২২ জুন ৯ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৭ জুন দেশে ফেরে প্রতিনিধিদলটি।
মন্তব্য করুন