খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের নেতারা বলেছেন, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে নির্বাচনের জন্য সংস্কার, বিচার ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
তারা বলেন, নির্বাচনের পূর্বেই দৃশ্যমান সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি। জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে। গণহত্যাকারী পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রয়োজন। পেশিশক্তি, কালো টাকার প্রভাবমুক্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয় বৈঠকে নেতারা বলেন, বিগত ৫ আগস্ট বহুল প্রত্যাশিত জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে। কিন্তু এতে বেশ কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৩তম দফায় এক-এগারো সরকার ও ২০০৮ সালে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ১৭তম দফায় অভ্যুত্থানের শহীদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার উল্লেখ করা হয়েছে, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লিখিত সংখ্যা থেকে অনেক কম। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ শাসনামলে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অসংখ্য নিরীহ আলেম-উলামা ও ছাত্র-জনতাকে রাতের আঁধারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। ২০২১ সালের মার্চ মাসে নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে সংঘটিত বিক্ষোভে ভারতীয় তাবেদার সরকার গুলি চালিয়ে ২১জন মানুষকে হত্যা করেছিল। এই ধরনের সংগ্রাম তরুণ প্রজন্মের মননে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের বীজ বপন করেছিল। অথচ এসব গুরুত্বপূর্ণ ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। উপরোক্ত সংশোধনীগুলো জুলাই ঘোষণাপত্রে না থাকলে তা হবে অপূর্ণাঙ্গ, অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপন্থি ও জাতির জন্য হতাশাজনক। আমরা অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি জানাই।
গত বুধবার সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমিরে মজলিস মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, সাইয়্যেদ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুর রহমান ফিরোজ, আবু তানজিম, ডা. রিফাত মালিক, শায়খুল ইসলাম, তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, মো. জিল্লুর রহমান, সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, আজিজুল হক, সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, নুর হোসেন, মো. আবুল হোসেন, আজীজুল হক, আমির আলী হাওলাদার, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন