আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এতে নির্বাচন আয়োজনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ কথা জানান তিনি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না এ সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইইউ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল না পাঠালেও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতায়ও কোনো প্রভাব পড়বে না। অতীতের নির্বাচনগুলোও তাই বলে। তবে আমি এ ব্যাপারে এখনও কিছুই জানি না। অফিসে সকাল থেকে ছিলাম।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এখনও কিছু জানানো হয়নি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে মুহূর্তে জানানো হবে, আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশন এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছে জানালে তিনি বলেন, আমরা পাইনি তো। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাদের যোগাযোগ আর আমাদের যোগাযোগ, মানে সরকারের অংশ হিসেবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে থাকলে, তারা এখনও আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।
এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, বাজেট স্বল্পতার কারণে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে না ইইউ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে। বুধবার সরকারকে চিঠি দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সংঘাতের শঙ্কা করছে সংস্থাটি। প্রশ্ন রয়েছে নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ নিয়েও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকার ইইউ সদস্যভুক্ত দেশের এক রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে ঢাকায় থাকা ইইউ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। নির্বাচন কমিশন বা সরকার আমন্ত্রণ জানালে জাতীয় নির্বাচনে পূর্ণ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বদলে ছোট একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে পারে ইইউ।
নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে ইইউর ছয় সদস্যের একটি প্রাকনির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল গত ৮ থেকে ২৩ জুলাই বাংলাদেশ সফর করে। প্রতিনিধি দলটি মূলত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিকস ও নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে মূল্যায়ন করে। প্রাকনির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলটি বাংলাদেশের সরকারের প্রতিনিধি, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে।
২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে কী ধরনের গুণগত পার্থক্য তৈরি হয়েছে, তা খোঁজার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ সফরে আসা ইইউ নির্বাচনী পরিবেশ অনুসন্ধান মিশন। সেই সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ ও দলগুলো অংশগ্রহণ করবে কিনা, তা বোঝার চেষ্টা করেছে প্রতিনিধি দলটি।
মন্তব্য করুন