বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকারের অবস্থা বড়ই খারাপ। যখন কেউ আবোলতাবোল বলতে শুরু করেন, তখন বুঝতে হবে তাদের অবস্থা খারাপ, হুঁশ নেই।
আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে পানির ট্যাংকির সামনে একদফার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, তারা (সরকার) বলছেন স্যাংশন নাকি হয়েছে তাদের কথামতো। তারা চেয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, আর বিএনপি নাকি তাতে বাধা দিচ্ছে। এর জন্য নাকি আমেরিকা বলেছে যারা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিবে তাদের জন্য ভিসানীতি। সরকারের কোনো অসুবিধা নেই। তাহলে আপনারা (সরকার) কেন এত ভয় পাচ্ছেন? ভেতরে এত কান্নাকাটি কেন?
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, কেউ নিজের জন্য, কেউ ছেলের জন্য, কেউ বউয়ের জন্য আজ অস্থির হয়ে গেছে। কারণ, যার ওপর ভিসানীতি আসবে তার পুরো পরিবারের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করছি। আর সরকার ২০১৪ এবং ’১৮ সালের মতো প্রহসনের নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। আমরা আন্দোলন করছি, বাধা দিচ্ছি- যাতে সে অবৈধ নির্বাচন না হয়। আমরা সংগ্রাম করছি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করার জন্য। সুতরাং এ স্যাংশন আমাদের জন্য নয়- তাদের জন্য, ভোট চোরদের জন্য। এটি তারাও ভালোমত জানেন। তাদের ওপর স্যাংশন জারি না হলে তারা এত ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তেন না।
নজরুল ইসলাম বলেন, তারা (আ.লীগ) বলত বিএনপি মাজাভাঙা দল। তাহলে আপনারা কেন শয়নে-স্বপনে সারাক্ষণ বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম জপছেন? কথায় কথায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম যতবার আপনারা মুখে নেন, ততবার আল্লাহর নাম মুখে নিলে আপনারা বেহেস্তে যেতেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ গণতন্ত্র, ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। যে নেত্রী আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তাকে আজ বন্দি রাখা হয়েছে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিই সেই কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র।
গণসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সরকারের উদ্দেশে ১২ দলীয় জোটপ্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, মানে মানে বিদায় হোন। দেশের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেন। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেন। গণতন্ত্রকে মুক্তি দেন। নতুবা দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
জাতীয় পার্টির (জাফর) যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীম এবং এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর যৌথ সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল গনি, জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম শিকদার প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ভয়াবহ অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছে না সরকার। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তারা।
মন্তব্য করুন