ঢাকার নয়াপল্টনেই ২৮ অক্টোবরের বিএনপির মহাসমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দেওয়া ‘বিকল্প ভ্যানু’-বিষয়ক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের কাছে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব দলের এই অবস্থানের কথা জানান।
তিনি বলেন, তারা (ডিএমপি) জানতে চেয়েছে, ভ্যানু অন্য কোথাও করবে কিনা। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের ভ্যানু এই দলীয় কার্যালয় (নয়াপল্টন) এর সামনেই থাকবে। এটা তাদের জানিয়েছি।
রিজভী বলেন, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। এই সমাবেশ সফল করতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা রাতদিন কাজ করছেন। জনগণের সুসংগঠিত করতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে সাংগঠনিকভাবে। আমরা ডেমোক্রেটিক প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত করে সমাবেশে নিয়ে আসা আমরা সেই কাজ করছি। প্রতিনিয়ত আপনাদের মাধ্যমে বলছি এটা (মহাসমাবেশ) বড় যেন হয় সেটা তো আমরা করছি। প্রতিটি রাজনৈতিক দল এই কাজটি করে থাকে। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাপর্বে একটা চূড়ান্ত লগ্নে উপস্থিত হয়েছি। মানুষ অধিকারহারা, ভয়ে ভয়ে থাকছে, ফেইসবুকে কেউ একটু কিছু লেখছে তাকে নির্যাতনের মুখে পড়তে হচ্ছে। আমরা এর পরিবর্তন চাই, জনগণ এর পরিবর্তন চায়।
নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এর আগে ডিএমপির থেকে পাঠানো চিঠি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা বারবার বলেছি, আমাদের সমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। আর সরকার সংঘাতের উসকানি দিচ্ছি। তারা সংঘাতের হুমকি দিচ্ছি। তারা বলছে তারা লাঠি নিয়ে যাবে। গতকালও তাদের (আওয়ামী লীগের) নেতারা বলেছে, তাদের সাধারণ সম্পাদক কয়েকদিন আগে বলেছেন শাপলা চত্বরে হেফাজতের পরিণতি হবে…। এখন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ আঘাত করার যদি নির্দেশনা দেওয়া হয়… আঘাতের মধ্য দিয়ে মানুষ মৃত্যুবরণ করে অর্থাত আঘাতের মধ্য দিয়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে তারা।
তিনি বলেন, কিন্তু আমরা বিএনপি স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যে কর্মসূচি করা দরকার সেই প্রক্রিয়ায় আমরা কর্মসূচি করছি। আমরা বার বার শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলছি, জনগণকে জানাচ্ছি।আপনারা কি দেখছেন? দেখছেন তো প্রতিদিন একশ/দেড়শ/দুইশ করে নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের কথা আমরা আপনাদের জানাচ্ছি। আমাদের নেতাকর্মীকে কোথাও দেখেছেন কোনো বেআইনি আচরণ করতে কিংবা প্রচলিত যে আইন আছে তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটনা কি দেখছেন? কিন্তু আমরাই দেখছি, আমাদের নেতাকর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করছে গোয়েন্দা পুলিশ। আমাদের নেতা খায়রুল কবির খোকন (যুগ্ম মহাসচিব) জাতীয় পর্যায়ের নেতা … তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো, তার সদস্য সচিব মঞ্জুর ইলাহীকে কয়েকদিন আগে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো … গ্রেপ্তার করতে গিয়ে হত্যা হয়েছেন আমাদের কুষ্টিয়ার কৃষক দলের মেহেদি হাসান আকবরক নির্যাতনে মারা যায়। এদের দিক থেকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস একযোগ হচ্ছে। এসব ফেইসব করে আমরা জনগণকে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওদের (সরকারি দল) ভয় তো জনগণকে, জনগনের সমাবেশকে। আমাদের তো সেই ভয় নেই। আমরা জনগণ নির্ভর রাজনৈতিক দল, তাদের ওপর আমরা ভরসা করে আছি। আমাদের না আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, না আছে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যেগুলো দিয়ে একেবারে হাতের মুঠোয় নিয়ে ব্যবহার করা যায়… সেই প্রতিষ্ঠান আমাদের নেই। আমরা জনগনকে আহ্বান করছি আরেকটি একতরফা অবৈধ নিশিরাতের নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় থাকার যে মাস্টার প্লান আকা হয়েছে আমরা সেটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি, থাকব।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল করিম শাহিন, মো. মুনির হোসেন, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন