মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তি ইসরাইলের এজেন্ট বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তি ইসরাইলের এজেন্ট। মার্কিন দূতাবাস ইতোমধ্যে পরিষ্কার করেছে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা নন। মার্কিন দূতাবাস তাকে চেনেই না। বিএনপি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে।
গতকাল শনিবার (২৮ অক্টোবর) মহাসমাবেশে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর হঠাৎ নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির নেতা ইশরাক হোসেনসহ কয়েকজন। সেখানে মিয়ান আরাফি এক বিদেশি নাগরিকও বক্তব্য দেন। যিনি নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনি উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেন।
এ ঘটনায় মার্কিন দূতাবাস একটি বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। পাশাপাশি ভিসানীতির বিষয়টি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছে, সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে সব সহিংস ঘটনা পর্যালোচনা করা হবে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সহিংসতার নিন্দা তো সবাই জানাতে পারে। আমরাও নিন্দা জানাচ্ছি। আশা করব যারা পুলিশ মেরেছে, পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে, জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা করেছে, হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে এবং প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসানীতি প্রয়োগ হবে।
একটি দল সরাসরি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে হামলা চালিয়েছে, সেটার তীব্র নিন্দা জানাই। কোনো দলের পক্ষ হয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে যাননি। তারা সেখানে সংবাদ সংগ্রহে গেছেন। তাদের ওপর কেন হামলা হলো? যাদের ওপর হামলা হয়েছে, তারা বিএনপি বিটের সাংবাদিক। এটি গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলা ও গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর বিচার হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিল। সরকার, প্রশাসন, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। তারা যেখানে সমাবেশ করতে চেয়েছে, সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এর আগে কখনো প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়নি। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে হাজার হাজার মিছিল এই বাসভবনের সামনে দিয়ে গেছে। কাকরাইল মোড়ে অনেক সময় অনেক গণ্ডগোল হয়েছে, কিন্তু কখনো প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়নি। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ১৯টি গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্সসহ ভাঙচুর করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইসরাইলি বাহিনী গাজায় হামলা চালিয়ে ৮০০ মানুষকে হত্যা করলেও এ বর্বরতার বিরুদ্ধে একটি শব্দ উচ্চারণ করেনি বিএনপি ও জামায়াত। বরং ইসরাইলি বাহিনীর অনুকরণে তারা শনিবার হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। নাইটিংগেল মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে একজন পুলিশকে পিটিয়ে পরে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। একশর বেশি পুলিশ সদস্য আহত, দুজনের অবস্থা গুরুতর এবং আনসারের ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা টেলিভিশনে দেখিয়েছেন। দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোনো জায়গায় যুদ্ধ হচ্ছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারবাগে হামলা চালিয়েছিল। শনিবার বিএনপি-জামায়াত রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে।
মন্তব্য করুন