সরকার পুলিশ বাহিনীসহ অন্যদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে নানা গুজব ছড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমেও খবরগুলো এমনভাবে আসছে—দেখলে মনে হবে সত্য; আসলে সত্য নয়। এখন একটি গুজব ছড়াচ্ছে, আমরা নাকি পুলিশের তালিকা করছি।
‘আমাদের কেন পুলিশের তালিকা করতে হবে? এই সরকার গেলে পুলিশ নিজেই বলবে কে, কী করেছে। যেটা এরশাদ পতনের পরে হয়েছে। পুলিশের তালিকা করছে বিএনপি—এরকম একটি গুজব ছড়িয়ে পুলিশকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায়, যাতে করে তারা শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে অটুট হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশের শতকরা ৯৮ শতাংশ ভালো। যারা খারাপ তাদের তালিকা বিভিন্ন দেশে আছে। সে সংখ্যা ৫০ জনের মতো হতে পারে। তাদের কোনো দেশ নেবে না।’
মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গ টেনে আজ রোববার (২৫ জুন) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকাস্থ ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী পরিষদের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়। সংগঠনের নুরুল আমিন ভূঁইয়া বাদশার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন—বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নবী উল্লাহ নবী, যুবদলের খন্দকার এনামুল হক।
সমাবেশে গয়েশ্বর বলেন, সরকারের যে অবস্থা তারা বাঘের লেজ দিয়ে কান খোচায়। শেখ হাসিনা পদত্যাগ যে করবে, কার কাছে ক্ষমতা দেবে; লোকটাকে খুঁজে পাচ্ছে না। ক্ষমতা দিয়ে কোন দেশে যাবেন, দেশটাও খুঁজে পাচ্ছে না। পাশের দেশে গেলে ’৭১ সালের মতো শরণার্থী হিসেবে যেতে পারবেন। সেন্টমার্টিন আমেরিকাকে দিলে নাকি তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। আসলে শেখ হাসিনা দেশটা দিয়েও যদি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন, তাহলে সেই কাজটি করতে তিনি ভুল করতেন না। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে সেন্টমার্টিন তারা চাননি। এর আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ভারতকে যা দিয়েছি, তা তারা চিরদিন মনে রাখবে। তাদের দেওয়ার মতো কিছু নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকার ভাবছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকা যাবেন, এই উসিলায় একটা কিছু ম্যানেজ করবেন। কিন্তু মোদি নিজের গদি রক্ষা করবেন, নাকি শেখ হাসিনার গদি রক্ষা করবেন? তারই তো সমস্যার শেষ নেই। সে আবার কার জন্য সুপারিশ করবে? মনে হয় কোনো লাভ হয়নি।
‘আমাদের সীমান্তে কুকুর-বিড়ালের মতো মানুষ মারে, তার প্রতিবাদ করার ক্ষমতা নেই; তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নাকি আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ করবেন, চিন্তা করেন। আমেরিকা যদি আমাদের পোশাক না নেয়; তাহলে আমাদের কী অবস্থা হবে।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারকে সরালেই সবাই মুক্ত হবে; সেই কাজটি আমাদের করতে হবে। সরকার আমাদের আন্দোলনকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে, এ ব্যাপারে আপনাদের সাবধান থাকতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের স্লোগান হচ্ছে এই মুহূর্তে দরকার, জনগণের সরকার। আর কিছু ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী যারা শেখ হাসিনা আশপাশে গত ১৫ বছর ধরে লুটপাট করছে—তারা বলছে সারা জীবনের জন্য দরকার, শেখ হাসিনা সরকার। এ ছাড়া তো তাদের আর কোনো পথ নেই।
‘নেতাকর্মীদের বলব, এই সরকারকে বিদায় করতে প্রস্তুতি নেন। আমরা এক দফা দাবিতে নামি, তাহলে সব দাবি পূরণ হবে।’
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রের পর স্বৈরতন্ত্রও শেষ করে এখন মাস্তানতন্ত্র কায়েম করেছে।
মন্তব্য করুন