সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় যাওয়ার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সবাই মিলে দেশ পরিচালনা করব, কিছুদিনের জন্য তো অনেক দেশে হয়ে থাকে কোনো ক্রাইসিস হলে। তবে এ রকম কোনো অফার আমরা পাইনি।
শনিবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর জেলা ও মহানগর দলের কর্মিসভায় যোগদানের পূর্বে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এরপর তিনি নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির কর্মিসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রিসভায় যাওয়ার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, সংসদে বিরোধী দল সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। আর সরকার মানে হলো সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভা একত্রভাবে সরকার। যদি আমরা অ্যাকাউন্টেবল করতে চাই, তার (সরকার) দোষ-ত্রুটি তুলে ধরতে চাই, তাহলে তো আমি মন্ত্রিসভার সদস্য এটা সম্ভব না।
জি এম কাদের বলেন, সংসদ মোটামুটি গতানুগতিকভাবেই চলছে। যেহেতু সংসদে বিরোধী দলের সংখ্যায় আমরা কম। তাই সরকারের পক্ষেই একতরফাভাবে বেশিরভাগ কথাবার্তা হচ্ছে। সংসদ আরও সুন্দর কার্যকর হয় যদি উত্তপ্ত হয়। যদি উভয়পক্ষই সমান সমানভাবে কথাবার্তা বলে, তাহলেই সংসদটা সত্যিকার অর্থে কার্যকর এবং প্রাণবন্ত হয়। সেটা এখন পর্যন্ত হয়নি।
মিয়ানমার ইস্যুতে তিনি বলেন, মিয়ানমার আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান যুদ্ধে বাংলাদেশে নতুন সমস্যার সূচনা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তবে দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে এবং বাংলাদেশ বিপদমুক্ত হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
জি এম কাদের বলেন, মিয়ানমারের সৈন্যরা যেহেতু ফিজিক্যালি আমাদের দেশে প্রবেশ করছে, এটা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন আছে। এ নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা এ বিষয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। যেটাই হোক না কেন, এ বিষয়ে দেশবাসীর কাছে সুস্পষ্টভাবে বিষয়টি তুলে ধরা দরকার।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ও সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জি এম কাদের বলেন, রাজনীতি ও দল করার অধিকার সবার রয়েছে। যারা এসব করছে, তারা কেউ জাতীয় পার্টির নয়। তাছাড়া এসব কাউন্সিল আইনগত কোনো ভিত্তি রাখে না। এজন্য এ বিষয়ে আমাদের কোনো মতামত নেই।
এ সময় আগামীতে শিক্ষার মান বাড়ানোসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারের প্রতি দাবি তোলা হবে বলে জানান বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় সরকারদলীয় ছাত্রনেতারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন।’
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন