কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম
আপডেট : ০২ জুন ২০২৪, ০৬:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জামায়াত-শিবিরের প্রশংসায় মির্জা ফখরুল

জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন না করলেও জ্ঞানচর্চায় তাদের কর্মপদ্ধতির প্রশংসা করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জিয়াউর রহমানের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানে জামায়াত ইসলামীর প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করলে হবে না, জেনে শুনে রাজনীতি করতে হবে। আমরা তো আসলে দুঃখজনকভাবে হলেও সত্য, আমরা অন্যান্য দলগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখবেন, আমি রেফারেন্সলি বলতে চাই, আমি জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর যে কৌশল তাদের রাজনৈতিক যে প্রক্রিয়াটা তা অত্যন্ত বিজ্ঞান সম্মত। ঠিক কমিউনিস্ট পার্টির মতো অনেকটাই খেয়াল করে দেখবেন।

এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তাদের স্টাডি সেল আছে তাদের যে ছাত্রশিবির আছে তাদের প্রত্যেকটার সেল আছে। তাদের লেখা পড়া করতে হয়, বই পড়তে হয় সেই বই পড়ে তাদের উত্তর দিতে হয়। সেটার জন্য তারা নিজেরা পড়ে, তারা পত্রিকা প্রকাশ করে এগুলোর চর্চা যদি না থাকে জ্ঞানের চর্চা ছাড়া জ্ঞান ছাড়া আপনি কখনো সফলতা অর্জন করতে পারবেন না।

সিপিবিসহ সমাজতন্ত্রীদের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান যখন দায়িত্ব পেলেন তখন তার প্রথম দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। সেজন্য তিনি গণতন্ত্রান্ত্রিক ইনস্টিটিউট ডেভেলপ করতে থাকলেন বহু ইতিহাস না পড়লে এগুলো জানতে পারবেন না। তিনি প্রতিটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কথা বলেছেন, ন্যাপের সঙ্গে বলেছেন, কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী তখন ছিল না, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগের সঙ্গে কথা বলেছেন, মুসলিম লীগসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার সঙ্গে কথা বলে সবার একটা ধারণা তৈরি হয়েছে, আসলে সে (জিয়াউর রহমান) একজন দেশপ্রেমিক, সে কাজ করতে চায় তাকে দিয়ে কাজ হবে।

শুনলে আপনারা অবাক হবেন, কমিউনিস্ট পার্টির মতো পার্টি যারা সবসময়ই সামরিক ব্যবস্থাকে সহ্য করতে পারে না, যারা সবচেয়ে ক্রিটিক ছিল সামরিক অভ্যুত্থানের তারা প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯ দফাকে সমর্থন দিয়ে দিলেন, মোজাফফর ন্যাপ তারা সমর্থন দিল।

জিয়াউর রহমানের ওপর একটি লেখা বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সংবিধানে যখন বিসমিল্লাহ সংযোজন করা হলো প্রফেসর মোজাফফর আহমদ বলেছেন, অসুবিধাটা কোথায়। বিসমিল্লাহ দিয়ে যদি কাজ শুরু করা যায় অসুবিধাটা কোথায়? বিসমিল্লাহ বলে যদি আমি ভালো কাজ করতে পারি তাহলে সমস্যাটা কোথায়? আর আমি যদি সোশ্যালিজমের সামনে যদি বিসমিল্লাহ বসাই, আমার সমস্যা কোথায়? এভাবেই বাম পন্থিরা সমাজতন্ত্রীরা জিয়াউর রহমানের প্রতি আকৃষ্ট হলেন তারা তাকে সমর্থন দিয়ে দিলেন। এটা অনেকে জানে না, ১৯ দফা কর্মসূচিতে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ও মোশারফের ন্যাপ সমর্থন দিয়েছে। এগুলো আমাদের জানা দরকার। সেজন্য বলি শুধু চিৎকার-চেঁচামেচি করে রাজনীতি হবে না, রাজনীতি করতে হলে আপনাদের জ্ঞানচর্চা করতে হবে।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। এই সংগঠনটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারি, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক সামসুল আলম সেলিম, ডা. আবু নাসের প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, যে কারণে আমি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকে অনুরোধ করেছি, আপনারা দয়া করেৃ আমি অনেক আগেও বার বার বলেছি যে ইউর আর বিকাম এ থিংক ট্যাংক বিএনপি হতে যাইয়েন না, থিংক ট্যাংক হন বিএনপির। আপনারা বইপত্র শুধু নয়, আপনারা সেমিনার করেন, আলোচনা সভা করে, ওয়ার্কশপ করে যাতে করে আমরা জিয়াউর রহমানকে আরও বেশি করে জানতে পারি, ছড়িয়ে দিতে পারি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক ডা. গাজী মাজহারুল হক, অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক ড. আক্তার হোসেন, অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম, প্রকৌশলী এ কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নু, ডা. মো. মেহেদী হাসান, প্রকৌশলী শাহীন হাওলাদার, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, অধ্যাপক ড. নাহারিন ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট নাদিম ভুইয়া, মিসেস শামিমা রহিম, দবির উদ্দিন তুষার, ছাত্রদল নেতা তরিকুল ইসলাম তারিক।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এশিয়া কাপ দল নিয়ে তোপের মুখে বিসিসিআই

নারী-শিশুসহ ছয় ভারতীয় নাগরিক আটক

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার : উপদেষ্টা আসিফ

পিয়াইন নদীতে অবাধে বালু লুট, হুমকিতে বসতবাড়ি 

সোনালী ও জনতা ব্যাংকের অফিসার পদের ফল প্রকাশ

নরসিংদীতে একজনকে কুপিয়ে হত্যা

হোয়াটসঅ্যাপে নতুন কৌশলে অর্থ চুরি, যেভাবে নিরাপদ থাকবেন

টিটিইসহ ৫ জন আসামি / তিন মাসেও শেষ হয়নি ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার তদন্ত

স্বামীর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু

রওনা দিয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, পাল্টা প্রস্তুতি ভেনেজুয়েলার

১০

দেশে হবে আরও ৫১৬ কমিউনিটি ক্লিনিক

১১

ফেসবুকে আমেরিকার বিরুদ্ধে কিছু বললেই পাবেন না ভিসা

১২

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে হতাহত পরিবারের পাশে তারেক রহমান

১৩

আশুলিয়ায় বিপুল অবৈধ সিগারেটসহ আটক ২

১৪

স্কুলছাত্র রনি হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

১৫

সরকারি অনুদানে নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রের মানোন্নয়নে সহযোগিতা করা হবে : মাহফুজ

১৬

শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালকের পদায়ন স্থগিতের দাবি

১৭

সিলেটে পাথর লুটে ১৩৭ নাম

১৮

মির্জা ফখরুলের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য জানালেন ডা. জাহিদ

১৯

ইতালিতে বাড়ছে অনিয়মিত অভিবাসী, শীর্ষে যে দেশ

২০
X