বর্তমান সরকারকে রাজনৈতিক বৈধতাবিহীন আখ্যা দিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি বলেছে, এই সরকারের বাজেট কখনোই জনকল্যাণকর হতে পারে না।
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে প্রাক বাজেট সংবাদ সম্মেলনে দলটি এই মন্তব্য করে। সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির নেতারা বলেন, যে সরকার নিজেই সংবিধান লঙ্ঘন করে।
প্রশাসনযন্ত্রকে অবৈধভাবে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে ডামি নির্বাচন নামক প্রহসনের মাধ্যমে জোরপূর্বক গদি দখল করে রাখে। ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিচার বিভাগকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দেয়। সেরকম রাজনৈতিক বৈধতাবিহীন সরকারের বাজেট কল্যাণকর হতে পারে না। রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান ও সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, এবি পার্টি মনে করে ঋণ ও ঘাটতি ভিত্তিক বড় বাজেট অতীতে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি আগামীতেও সম্ভব হবে না। একটি অনির্বাচিত সরকারের উপর করদাতারা আস্থা রাখেনা যার ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহ প্রয়োজনীয় কর আদায় করতে পারেনা। যথেষ্ট রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে এবছরের বাজেট হবে আরও বেশি ঋণ ও ঘাটতি নির্ভর। এ বছর আগের ১২ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে যা মোট রাজস্ব আয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। সরকারি কাজে ব্যয় কমানো কিংবা আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে এদের কোন উদ্যোগ নেই, এদের আগ্রহ অনুৎপাদনশীল উন্নয়ন প্রকল্পে।
তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বার বার বলার পরও ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলো বন্ধ করা হয়নি, এটি বন্ধ হলে ৩ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব হতো। কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অপর্যাপ্ত বরাদ্দের সাথে সাথে নতুন করে সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমাচ্ছ। যা দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। দিনকে দিন বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ কমছে। ইতোমধ্যেই আর্থিক খাতের অনিয়ম ও ডলার সংকট পুরো আমদানি- রপ্তানি ও জ্বালানি খাতকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তারল্য সংকট ও ব্যাংক খাতের জালিয়াতির কারণে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এত সমস্যা সংকুল পরিস্থিতিতে নতুন বাজেট নিয়ে জনগণের আশাবাদী হওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেই মনে করে এবি পার্টি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দেশের সকল ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি। শেয়ার বাজার লুট হয়ে গেছে বহু আগে। ব্যাংক খাতের লুটপাট শেষ পর্যায়ে। যে সরকার নিজেই আইনকানুন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে সে সরকার কীভাবে আর্থিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরাবে?
প্রশাসন যন্ত্রকে অবৈধভাবে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডামি নির্বাচন নামক প্রহসনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জোরপূর্বক গদি দখল করে রেখেছে। এর আগে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিচার বিভাগকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সকল স্তম্ভ ধ্বংসকারী এ ধরনের রাজনৈতিক বৈধতাবিহীন সরকারের বাজেট কখনোই জনকল্যাণকর হতে পারেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, যুগ্ম সদস্যসচিব কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমেদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, যুবপার্টি মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, রুনা হোসাইন, এনামুল হক, পল্টন থানা সদস্যসচিব আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা রনি, যুবনেতা নাসির উদ্দিন সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন