

ভাগ্যান্বেষণের প্রত্যাশায় দেশ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা। স্বপ্ন ছিল জীবন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণের। কিন্তু সেই স্বপ্নের পরিসমাপ্তি ঘটেছে বিদেশের নির্মম বাস্তবতায়।
মালদ্বীপের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, দেশটিতে গত ৬ দিনে ৪ প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মরদেহ বর্তমানে হিমাগারে রাখা আছে।
মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবছরে দেশটিতে মোট ৩৯ জন প্রবাসী বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন, যাদের মধ্যে ২৮ জন বৈধ কর্মী এবং ১১ জন অনিবন্ধিত (আনডকুমেন্টেড) শ্রমজীবী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। চলতি বছরে (২০২৫) এখন পর্যন্ত ২৬ প্রবাসী বাংলাদেশির জীবনাবসান ঘটেছে, যাদের অধিকাংশই হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের (স্ট্রোক) মতো প্রাণঘাতী জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অর্থায়নে মৃতদেহগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ায় স্বদেশে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে রাজধানী মালের হিমাগারে আরও কয়েকজন প্রবাসীর মৃতদেহ সংরক্ষিত রয়েছে, যেগুলোর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চলমান।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) মৃত্যুজনিত ঘটনাগুলোর প্রতি শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করতে এবং হিমাগারের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করতে সেখানে পরিদর্শনে যান মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম।
অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের প্রত্যাশায় প্রবাস জীবনে পা রাখা অসংখ্য বাংলাদেশির এমন অকালপ্রয়াণ প্রবাস-বাস্তবতার নৃশংস রূপকে আরও প্রকট করে তুলছে।
এ প্রসঙ্গে মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের শ্রম কাউন্সিলর মো. সোহেল পারভেজ বলেন, প্রবাসী মৃত্যুর পেছনে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা, শারীরিক ক্লান্তি, মানসিক অবসাদ, স্বল্প আয় ও পরিবার থেকে দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতা বড় কারণ হিসেবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করা গেলে এ ধরনের অকালমৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।
মন্তব্য করুন