দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত ‘মালয়েশিয়ার জেলের চাবি এনজেড ট্রাভেলসের হাতে’ শীর্ষক সংবাদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) হাইকমিশনের সচিব-১ (প্রেস) সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফ স্বাক্ষরিত দৈনিক কালবেলায় পাঠানো এক লিখিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, গত ৩ মার্চ দৈনিক কালবেলায় ‘মালয়েশিয়ার জেলের চাবি এনজেড ট্রাভেলসের হাতে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত সংবাদে দূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তার সহযোগিতায় এনজেড ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল নামের একটি এজেন্সির সিন্ডিকেটের নানা অনিয়মের বিষয় তুলে ধরা হয়। মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দুতাবাসের অসাধু কর্মকর্তা এবং এনজেড ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে হয়রারি করে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এরপর ওই প্রতিবেদন নিয়ে গত ৪ মার্চ কালবেলায় ‘দূতাবাসই যমদূত’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় লেখা হয়। ওই সংবাদের প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানায় দূতাবাস।
দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়, হাইকমিশন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। দৈনিক কালবেলা’য় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকমিশন জানাচ্ছে, কোনো অভিবাসী দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য টিকিট কাটার কোনো বিষয়ই হাইকমিশন নির্ধারণ করে না। কোনো অভিবাসী আটক হলে বা সাজার মেয়াদ শেষ হলে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ হাইকমিশনকে অবগত করে। আটক অভিবাসীর পরিচয় নিশ্চিত হলে হাইকমিশন তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। পরিবারের সদস্যরা তাদের পছন্দমতো এজেন্সি থেকে টিকিট কেটে অভিবাসীকে দেশে নিয়ে যান। এক্ষেত্রে কোনো নির্ধারিত ট্রাভেল এজেন্সি ঠিক করা নাই। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে টিকিট কাটা যায়। বিমানের টিকিট হাইকমিশন নির্ধারণ করে মর্মে প্রতিবেদনে যে উল্লেখ করা হয়েছে, তা অসত্য বলে দাবি করে হাইকমিশন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, পাসপোর্ট নাই, হারিয়ে গেছে বা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে এমন কোনো বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চাইলে হাইকমিশন বরাবর ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করেন। সাধারণত যেদিন আবেদন করা হয় সেদিনই ট্রাভেল পারমিট প্রদান করা হয়। তবে ডিটেনশন ক্যাম্প হতে যখন অপর্যাপ্ত তথ্য সম্বলিত কোনো তালিকা হাইকমিশনে আসে তখন পরিচয় নিশ্চিত হতে কিছুটা সময় লাগে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে হাইকমিশনের কর্মকর্তা নিজে ক্যাম্প পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করেন। আটককৃত অভিবাসীর পরিচয় নিশ্চিত না হলে (অপর্যাপ্ত ডকুমেন্টের জন্য) প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে নাগরিকত্বের তথ্য নিশ্চিত সাপেক্ষে ট্রাভেল পারমিট প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে অহেতুক বিলম্বের কোনো সুযোগ নাই।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়া সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। ‘দৈনিক কালবেলা’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাই করে দেখবে হাইকমিশন। হাইকমিশনের কারও জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চিঠিতে হাইকমিশন জানায়, কারও কাছে যদি কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীর কোনো অনভিপ্রেত কাজে লিপ্ত থাকার কোনো প্রমাণ থাকে তা মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দৃষ্টিগোচর করার অনুরোধ জানানো হলো। হাইকমিশনের মতো সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সংবাদ শিরোনাম করতে দৈনিক কালবেলার মতো স্বনামখ্যাত পত্রিকার কাছে তথ্যগত সঠিকতা নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রকাশ হাইকমিশন প্রত্যাশা করে।
মন্তব্য করুন