সহবাস, স্বপ্নদোষ, ইচ্ছাকৃত বীর্যপাত ও নারীদের হায়েজ-নেফাসের পর গোসল করা ফরজ। এসব কারণে কারও শরীর অপবিত্র হলে যত দ্রুত পারা যায় গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা উচিত। কারণ, রাব্বুল আলামিন পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন মানুষদের ভালোবাসেন। কোরআনে বলা হচ্ছে, ‘সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তাওবা : ১০৮)
তবে, গোসল ফরজ হওয়ার পরও অনেকে দেরিতে গোসলে যান। এ ক্ষেত্রে অনেকে দাবি করেন, গোসল ফরজ হলে দেরি করলে পাপ হবে বা সে অবস্থায় মাটির ওপর হাঁটলে মাটি অভিশাপ দেবে। আবার কেউ কেউ বলেন, নারীরা দেরিতে ফরজ গোসল করলে সংসারের অকল্যাণ হয়। তাই প্রশ্ন জাগে, তাদের এই কথাগুলো সত্য কি না। শরিয়তে এসব কথার কোনো ভিত্তি আছে কি না।
চলুন তাহলে ইসলামি স্কলারদের ভাষ্যমতে বিষয়টি জেনে নিই—
প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, গোসল ফরজ হলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব গোসল করা উচিত। তিনি জানান, গোসল যখন মানুষের ওপর ফরজ হয়, ওই সময়ে সে নানা কারণে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে থাকে। কারণ, ব্যক্তি তখন নাপাক শরীরে থাকে। এ জন্য যত অল্প সময়ে সম্ভব গোসল সম্পন্ন করা উচিত। যদি কোনো কারণে দেরি করতে হয়, তাহলে সুন্নত হলে অজু করে নেওয়া। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি অজু না-ও করে, তবে বড় কোনো গোনাহ হবে না। হ্যাঁ, এটা সুন্নাহর খেলাফ।
তিনি আরও বলেন, নারীরা দেরিতে গোসল করলে সংসারের অকল্যাণ হয়— এই কথা যারা বলেন, তারা নারীদের প্রতি এক ধরনের অবিচার করেন। আমাদের সমাজে নারীদের নিয়ে এরকম অনেককিছু বলা হয়। এসব কুসংস্কার।
রাজধানীর জামিয়া ইকরার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ বলেন, ফরজ গোসল এত দেরিতে করা উচিত নয় যে, পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজ কাজা হয়ে যায়। নামাজ কাজা করা নিঃসন্দেহে কবিরা গোনাহ। তাই ফরজ গোসল করতে না পারার জন্য নামাজ কাজা করার অজুহাত শরিয়তে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কাজেই মুমিনের উচিত হলো দ্রুত ফরজ গোসল আদায় করে নেওয়া। অবশ্য দেরিতে করলেও গোনাহ হবে না। কারণ, হজরত আয়শা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) কখনো কখনো জুনুবি (নাপাক) অবস্থায় ঘুমিয়ে যেতেন, এমনকি পানি স্পর্শও করতেন না।’ (তিরমিজি : ১১৮)
মন্তব্য করুন