

রিজিক বা জীবিকার সংস্থান আল্লাহতায়ালার এক বিশেষ নেয়ামত। হালাল রিজিক শুধু জীবনের প্রয়োজন মেটায় না, বরং ইবাদত কবুলেরও গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ হালাল রিজিকের জন্যই পরিশ্রম করে দিনরাত। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, কোনো এক অজানা কারণে আয়-রোজগারে আগের মতো আর বরকত থাকে না— খুব কম সময়ে রিজিক যেন কমে যেতে শুরু করে।
আসলে রিজিক কমে যাওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে, যেগুলোর ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমার রব যাকে ইচ্ছা রিজিক দেন প্রশস্তভাবে, আবার যাকে ইচ্ছা দেন সীমিত করে। কিন্তু অনেক মানুষই এটা বুঝে না।’ (সুরা সাবা : ৩৬)
চলুন জেনে নিই, কোন কোন কাজ আমাদের রিজিকে প্রভাব ফেলে—
হারাম উপার্জন
মানুষের রিজিক কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হারাম উপার্জন। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানবজাতি, তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো।’ (সুরা বাকারা : ১৬৮)
রাব্বুল আল আমিনের এই নির্দেশ অমান্য করে হারাম উপার্জন করলে রিজিকে বরকত কমে যায়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল ও বৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে, তাকে বরকত দান করা হয়।’ (মুসলিম : ১০৫২)
সুদের কারবার করা
সুদের কারবারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবেও জড়িত থাকা উচিত নয়। সুদের কারবারে ব্যবসার বরকতও নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং সাদাকাকে বর্ধিত করে দেন।’ (সুরা বাকারা : ২৭৬)
প্রতারণা করা
মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করলে এবং মিথ্যা কসম খেলে আয়-উপার্জনের বরকত চলে যায়। আর বরকত চলে যাওয়া মানে রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘বেচাকেনা করার সময় তোমরা অধিক কসম করা থেকে সাবধান থেকো। কারণ, মিথ্যা কসমের দ্বারা বিক্রি বেশি হয়, কিন্তু বরকত ধ্বংস হয়ে যায়।’ (মুসলিম : ১৬০৭)
অকৃতজ্ঞ থাকা
মানুষ যখন তার প্রাপ্ত নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে, তখন তার থেকে সে নিয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবজীবন। কমে যায় রিজিক। আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে মনে রেখো, আমার শাস্তি বড়ই কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম : ৭)
ফুক্বাহায়ে কেরামের দাবি, উল্লিখিত কারণ ছাড়া আরও অসংখ্য কারণ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে রিজিক কমে যায়।
মন্তব্য করুন