দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগকে জনআকাঙ্ক্ষা পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামি স্কলার শায়খ মিজানুর রহমান আজহারি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টে আজহারি লিখেছেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম শিক্ষক নিয়োগে এদেশের অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের দাবিকে উপেক্ষা করে, অযাচিতভাবে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা প্রদান করেছে। আমরা এই অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে প্রাথমিক স্তরে ইসলাম শিক্ষার জন্য বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষক নেই। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অথচ সংগীতের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে ডেডিকেটেড শিক্ষক নিয়োগ স্পষ্টতই জনআকাঙ্ক্ষা পরিপন্থি। আমরা আমাদের সন্তানদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের নিরাপত্তা চাই।’
এর আগে গতকাল একই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহও। এদিন রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক, এটা বহুকাল ধরে গণমানুষের প্রাণের দাবি ছিল। সেই দাবি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ প্রাথমিকে গানের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।’
আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘এই দেশে কত পার্সেন্ট মানুষ সন্তানকে গান শেখায়? কত পার্সেন্ট মানুষ স্কুলে গানের শিক্ষক চায়? বরং অধিকাংশ অভিভাবক চায়, বিদ্যালয়ে যেন তাদের সন্তানকে গান শেখানো না হয়। এ দেশের প্রায় সব অভিভাবক সন্তানের জন্য প্রাইভেট ধর্মীয় শিক্ষক রাখেন কিংবা সন্তানকে মক্তবে পাঠান। সরকার যদি স্কুলে বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিত, তাহলে অভিভাবকদের এই বাড়তি খরচ ও ঝামেলা পোহাতে হতো না। শিক্ষার্থীদেরও সময় বেঁচে যেত।’
শিক্ষার মান দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার পেছনে রাষ্ট্র প্রতি মাসে শত শত নয়; বরং হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। অথচ শিক্ষার মান দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। একদিকে অভিভাবকদের আস্থা হারাচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো, অপরদিকে কিশোর গ্যাংয়ের মতো ভয়াবহ অপরাধ দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এমতাবস্থায় প্রয়োজন শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ। সেটা না করে কাদের খুশি করার জন্য গানের শিক্ষক নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো?’
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমাদের উদাত্ত আহ্বান, গণআকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে বাইরে থেকে আমদানি করা কালচার চাপিয়ে দেওয়ার চিরাচরিত পথ পরিহার করুন। দেশের মানুষ এসবের পরিবর্তন চায়।’
মন্তব্য করুন