চট্টগ্রামে এক ঐতিহাসিক দিন পার করছে বাংলাদেশ। সিলেটের ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর দলটি যেন নতুন এক চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে। চট্টগ্রামের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সাদমান ইসলামের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও তৃতীয় দিনে মেহেদী হাসান মিরাজের লড়াকু শতরানে ভর করে টাইগাররা দাঁড়িয়ে গেল বিশাল ৪৪৪ রানে, জিম্বাবুয়ে থেকে এগিয়ে ২১৭ রানে।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা হয় সাদমানের ব্যাটিং দিয়ে। ১৮১ বলের অনবদ্য ইনিংসে ১২০ রান তুলে তিনি দলকে দিলেন মজবুত ভিত। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ নামলেন মঞ্চে, তখন বাংলাদেশ হঠাৎ ব্যাটিং বিপর্যয়ে। তবে নাটকীয়ভাবে টেইলএন্ডারদের নিয়ে তিনি পাল্টে দিলেন চিত্রনাট্য। ১৬২ বলে ১০৪ রান—বাংলাদেশের ইনিংসের প্রাণ তিনি। তার শতরান যেমন দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে, তেমনি প্রতিপক্ষের মুখে এনেছে উদ্বেগের রেখা।
এই ইনিংসটা আলাদা কেন? কারণ আটজন ব্যাটারই পেরিয়েছেন ২০ রানের গণ্ডি। একসাথে উইকেট না হারানো, ধৈর্য্য ও ধাক্কা সামাল দেওয়ার মানসিকতা—সব মিলিয়ে এটা ছিল এক চমৎকার টেস্ট ব্যাটিং প্রদর্শনী।
তবে এই ম্যাচের আসল চমক ছিলেন স্পিনাররা। একদিকে জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা তুলে নিলেন ৫ উইকেট—অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু বাংলাদেশি স্পিনার তাইজুল ইসলাম তো পুরো ইনিংসই গুঁড়িয়ে দিলেন! নিয়েছেন ৬ উইকেট, জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপকে করেছেন ছিন্নভিন্ন।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে থেমে যায় মাত্র ২২৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসেও তারা এখনো ৬ ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি ঠিকই, তবে সামনে পাহাড়সম চাপ—২১১ রানের ঘাটতি, আর বাংলাদেশকে সিরিজে সমতায় আসতে না দেওয়ার যুদ্ধ।
এই ম্যাচ এখন যে দিকে মোড় নিচ্ছে, তাতে চট্টগ্রামে চলছে এক রুদ্ধশ্বাস টেস্ট নাটক। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখন বাংলাদেশের হাতে, কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট তো জানেই না কে কবে ফিরে আসবে। তবে যেটা নিশ্চিত, এটাই বাংলাদেশের ক্রিকেটে আরেকটি লড়াকু অধ্যায়ের নাম হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন