ক্রিকেট মাঠে ব্যাটারদের জন্য শূন্য রানে আউট হওয়া কোনো নতুন ব্যাপার নয়। কিন্তু কল্পনা করুন, আপনি ব্যাট হাতে নেমেছেন অথচ এক বলও খেলার সুযোগ পেলেন না—এর আগেই আউট! হ্যাঁ, এটাই ক্রিকেটের সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ও বিরল এক ঘটনা—‘ডায়মন্ড ডাক’।
কী এই ডায়মন্ড ডাক?
ডায়মন্ড ডাক অর্থাৎ ‘হীরক শূন্য’ হয় যখন কোনো ব্যাটার এক বল না খেলেই আউট হয়ে যান। সাধারণত এটি ঘটে রানআউট হওয়ার মাধ্যমে, বিশেষ করে নন-স্ট্রাইকার ব্যাটার যখন স্ট্রাইক পাওয়ার আগেই রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। মাঝেমধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বা অস্থির সিদ্ধান্তের কারণে স্ট্রাইকার ব্যাটারও এই ভাগ্যে পড়তে পারেন। তবে এছাড়াও বাংলাদেশের বিপক্ষে গত বিশ্বকাপে ম্যাথুসের সেই বিখ্যাত টাইমড আউটও ডায়মন্ড ডাক পর্যায়ে পড়ে।
“ডাক” শব্দটির উৎস কোথা থেকে?
‘ডাক’ শব্দটি এসেছে ইংরেজি ‘ডাকস এগ’ থেকে, যার মানে হাঁসের ডিম—যার আকৃতি ‘০’-এর মতো। সেখান থেকেই শূন্য রানে আউট হওয়াকে ডাক বলা হয়। এর বিভিন্ন রূপ রয়েছে—
তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে অপমানজনক ধরা হয় ডায়মন্ড ডাককে, কারণ এতে ব্যাটার ব্যাট হাতে কিছু করেই দেখাতে পারেন না।
বিরল এই ঘটনাগুলোর প্রভাব
বিশেষ করে টপ অর্ডার ব্যাটার বা কোনো দলের তারকা খেলোয়াড় যদি ডায়মন্ড ডাকের শিকার হন, তবে তা পুরো দলের মনোবল ও পরিকল্পনায় ধাক্কা দিতে পারে। ম্যাচ শেষে বিশ্লেষণে কিংবা হাইলাইটসে এই ধরনের মুহূর্তগুলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।
পরিসংখ্যানে ডায়মন্ড ডাক
ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১৬৪ জন ব্যাটার ডায়মন্ড ডাকের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ দলের ৭ জন রয়েছেন। তালিকায় আছেন:
এই তালিকায় অবশ্য বাংলাদেশের বাদেও বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটারের নামও আছে। এমন কিছু নাম রয়েছে, যারা সাধারণত ব্যাটিং দক্ষতার জন্য পরিচিত—যা এই আউটকে আরও চমকপ্রদ করে তোলে।
টেস্টে প্রথম ডায়মন্ড ডাক
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ডায়মন্ড ডাকের নজির স্থাপন করেন আলবার্ট রোজ-ইনিস (দক্ষিণ আফ্রিকা), ১৮৮৯ সালে। ১৩৬ বছর পরেও এই ঘটনা রয়ে গেছে ক্রিকেটের এক দুর্লভ অথচ রোমাঞ্চকর মুহূর্ত হিসেবে।
ডায়মন্ড ডাক কোনো ব্যাটারের ক্যারিয়ার মূল্যায়নের মাপকাঠি নয়, বরং এটি ক্রিকেটের নাটকীয়তার অংশ। হোক তা ভুল বোঝাবুঝি কিংবা দুর্দান্ত ফিল্ডিং—এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ক্রিকেট সবসময়ই অনিশ্চয়তার খেলা।
মন্তব্য করুন